জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক পাঁচ খুনির মধ্যে নূর চৌধুরী কানাডায় কীভাবে আছে, তার কাগজপত্র বাংলাদেশকে দিতে সম্মতি দিয়েছেন দেশটির আদালত। আর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে অগ্রগতির ব্যাপারে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। পঁচাত্তরের বিভীষিকাময় ১৫ আগস্টের বার্ষিকীর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় সরকারের কাছে থাকা সর্বশেষ তথ্য জানান আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাকি তিন খুনি কর্নেল শরীফুল হক ডালিম, কর্নেল রশীদ এবং মোসলেউদ্দিন রিসালদারের অবস্থান না জানলেও সরকার অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। ১৫ আগস্টের আগে আইনমন্ত্রীর কাছে সর্বশেষ জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।

সন্ধ্যায় ভিডিও বার্তায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা জিজ্ঞাসা করেছেন, বঙ্গবন্ধুর যে খুনিদের রায় এখনো কার্যকর করা যায়নি এবং যারা পলাতক আছে তাদের ব্যাপারে আমরা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছি? সেই ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, কানাডায় নূর চৌধুরী পলাতক আছে। সে কানাডীয় সরকারকে বলেছে বাংলাদেশে তাকে একটি মামলায় ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। কানাডীয় সরকারের একটি আইন আছে যেটা হচ্ছে, যে দেশে মৃত্যুদ- আছে, সেখানে মৃত্যুদ- হতে পারে এ রকম কোনো আসামিকে ফেরত পাঠায় না। সেই আবেদনের কারণে সে সেখানে বসবাসরত আছে।

অইনমন্ত্রী বলেন, সে (নূর চৌধুরী) কানাডীয় সরকারের কাছে কী লিখেছে এবং কী পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সেখানে থাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলো জানার জন্য আমরা কানাডীয় সরকারের কাছে সেই কাগজপত্রগুলো চেয়েছিলাম। কানাডীয় সরকার জবাব দিয়েছে যে, তাদের প্রাইভেসি অ্যাক্টে এই কাগজগুলো দেওয়া যায় না। তখন আমরা সেখানে আইনজীবী নিয়োগ করে আদালতে আবেদন করেছিলাম। আদালত বলেছেন, এই কাগজগুলো দেওয়া যাবে। তার পরিপ্রেক্ষিত্রে আমরা এখন অগ্রসর হচ্ছি।

আইনমন্ত্রী বলেন, আরেক খুনি রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিল। সেই ব্যাপারে এখন যে পরিস্থিতি হয়েছে, সেটি অবজার্ভ করছি এবং এর অগ্রগতির ব্যাপারে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।

বাকি তিনজনের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আর বাকি তিনজনের ব্যাপারে তাদের অবস্থান সন্ধন্ধে জানি না, কিন্তু আমাদের অনুসন্ধান চলছে। আমরা মনে করি যে, আমাদের এই প্রচেষ্টায় সাফল্য লাভ করব।

আইনমন্ত্রী বলেন, আমি একটাই কথা বলে রাখতে চাই, সেটা হচ্ছে যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা এই পাঁচজন পলাতক খুনিকে দেশে ফিরিয়ে এনে এই রায় সম্পূর্ণভাবে কার্যকর না করতে পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের খুঁজে বের করা ও আনার প্রচেষ্টা চলবে। যখন তাদের আনা হবে, তখনই এই প্রচেষ্টার পরিসমাপ্তি ঘটবে।

"