নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ আগস্ট, ২০২০

করোনায় পরীক্ষা

প্রাথমিকে ‘অটো পাস’ এইচএসসি সেপ্টেম্বরে

* প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাচ্ছে প্রস্তাব * সারসংক্ষেপ তৈরি * রোডম্যাপ করে প্রস্তুতি শুরু শিক্ষা বোর্ডের

করোনাভাইরাসের কারণে এবার পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী এবং অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা নাও হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। বিকল্প হিসেবে কেবল স্কুলপর্যায়ে পরীক্ষা হতে পারে। এসব সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করতে প্রস্তাব যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। সরকারপ্রধানের অনুমোদন পেলে এবার প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী এবং জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নেওয়া হবে না।

এদিকে পরীক্ষা কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে অথবা অক্টোবরের শুরুতে শুরু হতে পারে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এরই মধ্যে একটি রোডম্যাপ তৈরি করে বিভিন্ন প্রস্তুতি শুরু করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে পরীক্ষা শুরু হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে সবকিছু সচল হয়ে যাচ্ছে। তাই আগামী সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে অথবা অক্টোবরের শুরুতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আয়োজনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে নতুনভাবে প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। এজন্য শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত কেন্দ্রের বাইরে পার্শ্ববর্তী ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা চাওয়া হয়েছে। নতুন করে কেন্দ্র বাড়িয়ে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার আয়োজন করা হবে।

চলতি বছর গত ১ এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এই পরীক্ষাসূচি স্থগিত করতে বাধ্য হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্থগিত পরীক্ষার পরবর্তী সময় ঘোষণা না করায় অনিশ্চয়তায় দিন পার করছে প্রায় ১২ লাখ পরীক্ষার্থী।

প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আকরাম-আল-হোসেন গতকাল মঙ্গলবার বলেন, মুখ্য সচিবের সঙ্গে তিনজন সচিবের (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ) একটি সভা হয়েছে, সেখানে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই সভার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে, আমরা সারসংক্ষেপ তৈরি করেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও সারসংক্ষেপ তৈরি করছে। আগামী রবি-সোমবারের মধ্যে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। এবার যাতে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি এবং জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নিতে না হয় সেজন্য এই সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে এবার আর এই পরীক্ষা হবে না।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, পরীক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছি। সেগুলো নিয়ে আলোচনা করে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি সরকারের কাছে পাঠাব। তবে এখনো পরীক্ষা বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, অনেকগুলো বিকল্প সামনে রেখে তারা কাজ করছেন। কিন্তু সবকিছু নির্ভর করবে কখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে তার ওপর। বিশেষজ্ঞরা বিকল্প অনেকগুলো অপশন দিয়েছেন, তার মধ্যে এটা হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হলে এবারের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নেওয়া হবে না। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, দুই সমাপনী পরীক্ষা না হলেও স্কুল খোলা গেলে পঞ্চম ও অষ্টমের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ওই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই এ দুই শ্রেণিতে বৃত্তি দেওয়া হবে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা আছে, তবে এরপরও স্বাভাবিক ক্লাসে ফেরার পরিবেশ হবে কিনা, সে নিশ্চয়তা নেই।

কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) বিশেষজ্ঞরা ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিকের শ্রেণি কার্যক্রম শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি তৈরির কাজ করছেন। সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাস শুরু হলে কী হবে আর অক্টোবরে শুরু করা গেলে কী হবে সেই পরিকল্পনাই এখন সাজাচ্ছেন তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close