শাহজাহান সাজু

  ০৮ আগস্ট, ২০২০

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক খাত

কোভিড-১৯-এর ধাক্কা কাটিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। করোনা-প্রাদুর্ভাবে স্থগিত ও বাতিল হওয়া ক্রয়াদেশগুলো ফিরে আসতে শুরু করেছে। এর ফলে বাড়ছে রফতানি। তাই আশায় বুক বাঁধছেন এই গুরুত্বপূর্ণ খাতটির সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা প্রাথমিকভাবে কাটিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। আগের স্থগিত হওয়া রফতানি আদেশ কিছু ফিরে আসছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে সরকারও পোশাক খাত পুনরুজ্জীবিত করতে অব্যাহতভাবে আর্থিক ও নীতিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। তাই করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে এই খাত। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের প্রভাবে চলতি বছরের মার্চে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের রফতানি কমে যায় প্রায় ২০ দশমিক ১৪ শতাংশ। এরপর এপ্রিলে কয়েক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন রফতানি কমে ৮৫ দশমিক ২৫ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। মে মাসে কমে ৬২ শতাংশ। জুনেও রফতানি কমার ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। তবে এর ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির হার আগের তুলনায় কম। অর্থাৎ মাত্র ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, করোনার প্রাদুর্ভাবে পোশাক রফতানিতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে চলতি বছরের এপ্রিলে। ওই মাসে মাত্র ৩৭ কোটি মার্কিন ডলারের পোশাক রফতানি হয়, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৫ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। মে মাসে আয় বেড়ে দাঁড়ায় ১২৩ কোটি ডলারে; যা আগের বছরের চেয়ে ৬২ শতাংশ কম। জুনে এসে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। রফতানি আয় বেড়ে দাঁড়ায় ২২৪ কোটি ডলারে, যদিও এ অঙ্ক আগের বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৬৩ শতংশ কম। তবে আগের মাসের চেয়ে ৮২ শতাংশ বেশি। ইপিবির তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে রফতানি আয়ের ৮৪ দশমিক ২০ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে। গত অর্থবছর ২ হাজার ৭৯৪ কোটি ৯১ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ কম। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে ২৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ক্রেতারা আগে যে অর্ডারগুলো স্থগিত ও বাতিল করেছিলেন, সেই অর্ডার থেকেই এখন কিছু কিছু পণ্য নিচ্ছেন। তা ছাড়া নতুন অর্ডারও আসছে। তবে এটি খুবই কম। সামনে শীতকালীন অর্ডার কী পরিমাণ আসে, তা দেখার বিষয় বলে জানান তিনি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শীতকালীন অর্ডারের জন্য আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেখতে হবে। শীতকালীন রফতানি অর্ডার কী পরিমাণ পাওয়া যাবে, তার ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের আগামীর সম্ভাবনা। তারা বলছেন, সরকার অব্যাহতভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। সঠিকভাবে সরকার ঘোষিত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবহার করতে পারলে আগামীতে লাভবান হওয়া যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close