গাজী শাহনেওয়াজ

  ১৫ জুলাই, ২০২০

অনিশ্চয়তায় চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন

* ৫ আগস্ট মেয়াদ শেষ হচ্ছে* প্রশাসক না বর্তমান মেয়র দায়িত্বে থাকবেন তা নিয়ে গুঞ্জন

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন (চসিক ) অনিশ্চিত গন্তব্যে। কারণ আগামী পাঁচ আগস্ট সিটি নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে; এ সময়ের মধ্যে এটা (নির্বাচন) না হওয়ায় এ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচন আয়োজনের দিনক্ষণ শেষ হচ্ছেÑ এ কথা জানিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। মন্ত্রণালয় এ চিঠি পেয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ইসির চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিগগিরই সারসংক্ষেপ পাঠানো হবে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করতে চায় মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, মেয়াদ শেষে বতর্মান মেয়রের বদলে একজন প্রশাসক নিয়োগ করবে সরকার। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক দায়িত্ব পালন করবেন। তবে সরকার চাইলে বর্তমান মেয়রকে দায়িত্ব দিতে পারেন।

উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ তফসিল ঘোষিত চসিক সিটিসহ কয়েকটি নির্বাচন স্থগিত করা হয়। বিশ্বব?্যাপী ভয়াবহ করোনা সংক্রমণের মতো বাংলাদেশও এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় সব নির্বাচনের কার্যক্রম থামিয়ে দেয় ইসি। শেষ মুহূর্তে এসে নির্বাচন বন্ধ করায় ইসির পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ব?্যাপক গচ্চা যায়।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, নির্বাচন নিয়ে কমিশনের দোলায়মানের কারণে এক কোটি টাকার মতো ব?্যয় হয়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ইসি নির্বাচন শেষ করার উদ্যোগে বিএনপির মনোনীত মেয়রপ্রার্থী শাহাদাত হোসেন নির্বাচন বন্ধের দাবি জানান। তিনি বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, বিনোদন কেন্দ্রে জমায়েত নিষিদ্ধ, সেখানে কীভাবে সিটি নির্বাচন আয়োজন করা হচ্ছে।

ইসি সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের জন?্য নির্বাচন পরিচালনা ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর বাইরে ব?্যয় হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন?্য।

জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, চসিক নির্বাচন আপাতত হচ্ছে না। আগামী ৫ আগস্ট এ সিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে কিছু করার নেই। এ ছাড়া এ নির্বাচন সম্পন্নের সাংবিধানিক বাধ?্যবাধকতা নেই। এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ভেবে দেখুক তারা কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ের পর সরকার চাইলে একজন আমলাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সিটি নির্বাচনের কার্যক্রম তদারকির দায়িত্ব দিতে পারে। অথবা সরকার চাইলে বর্তমান মেয়রকে স্বপদে নিয়োগ দিতে পারেন। এতে কোনো আইনি জটিলতা নেই। এ সিটির বর্তমান পরিস্থিতি জানিয়ে পত্র দিয়েছি এখন পুরো সিদ্ধান্ত তাদের।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘চসিক সিটি নির্বাচন নিয়ে আমরা আজ (গতকাল) একটি চিঠি পেয়েছি। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই সিটির কার্যক্রম পরিচালনার জন?্য একজন প্রশাসক নিয়োগ দিতে চাই। এর জন?্য একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির জন?্য পাঠানো হবে। তিনি সম্মতি দিলে একজন প্রশাসক নিয়োগ করা হবে। করোনাকালীন সংকট কেটে গেলে সুবিধাজনক সময়ে এই নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।’

সরকার (সিটি করপোরশেন) আইন-২০০৯ এর ৩৮(১) এর ‘ক’ ধারায় আছ, করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সেই হিসাবে আগামী ৮ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাঁচ বছর পূর্ণ হব। করোনায় নির্বাচন না করতে পারায় প্রশাসক নিয়োগ করবে সরকার।

নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হলে বর্তমান মেয়র- কাউন্সিলরদের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে স্থানীয় সরকার আইনে। সিটি করপোরেশন আইন-২০০৯ এর ২৫(১)-এ উল্লখে রয়েছে ‘নতুন সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করা হইল অথবা কোনো সিটি করপোরেশন বিভক্ত করা হইল অথবা কোনো সিটি করপোরেশনের মেয়াদোত্তীর্ণ হইলে সরকার সিটি করপোরেশন গঠিত না হওয়া পর্যপ্ত উহার কার্যাবলি সম্পাদনের উদ্দশ্যে একজন উপযুক্ত ব্যক্তি বা প্রজাতন্ত্ররে কর্মে নিযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করিতে পারিবেন। এ বিধানবলে মন্ত্রণালয় প্রশাসক নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close