দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা হু হু করে যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে সুস্থতার হারও। গত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি রোগী সুস্থতা লাভ করেছেন যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরো আড়াই হাজারের বেশি এবং মারা গেছেন আরো প্রায় অর্ধশত রোগী।

করোনাভাইরাস বিষয়ে গতকাল রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরো ৫ হাজার ৫৮০ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৩ হাজার ৬১৪ জনে। রোগী শনাক্ত বিবেচনায় যার হার ৫০ দশমিক ৯৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৬৬ জন রোগী, ফলে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরো ৪৭ জন। এ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৩৫২ জনের।

এর আগে এক দিনে সর্বোচ্চ সুস্থ রোগীর সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৩৩২। সেটা জানানো হয় ২ জুলাইয়ের বুলেটিনে। আর গতকাল ১১ জুলাই দেওয়া হয়েছিল ১ হাজার ৬২৮ জনের সুস্থতার তথ্য।

এদিকে, হঠাৎ করে এত রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার তথ্যে বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলেন, কোনো হিসাবে এক দিনে এত বিপুল সংখ্যক রোগী সুস্থ হলেন, মোট সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের কত শতাংশ বাসায়, কত শতাংশ হাসপাতাল কিংবা আইসোলেশন সেন্টার থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত দেওয়া উচিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ৬৮ হাজার প্রায়। তবে প্রায় পৌনে এক কোটি রোগী এরই মধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা ৭৭টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১১ হাজার ২১০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে ১১ হাজার ৫৯টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট ৯ লাখ ৪০ হাজার ৫২৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হলো। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরো ২ হাজার ৬৬৬ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৪৭ জন মারা গেছেন, তাদের ৩৬ জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী। এদের মধ্যে ১০ বছরের বেশি বয়সি একজন, ২০ বছরের বেশি বয়সি দুইজন, ত্রিশোর্ধ্ব তিনজন, চল্লিশোর্ধ্ব চারজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৫ জন, ষাটোর্ধ্ব ১৪ জন, সত্তরোর্ধ্ব ছয়জন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সি দুজন ছিলেন। ২৩ জন ঢাকা বিভাগের, ছয়জন চট্টগ্রাম বিভাগের, চারজন রাজশাহী বিভাগের, চারজন সিলেট বিভাগের, ছয়জন খুলনা বিভাগের, দুজন রংপুর বিভাগের এবং দুজন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। ৪৩ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং চারজনের মৃত্যু হয়েছে বাসায়।

শনাক্ত, সুস্থতা ও মৃত্যুর হার

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আর রোগী শনাক্ত তুলনায় সুস্থতার হার ৫০ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।

বৈশ্বিক পরিস্থিতি

গোটা বিশ্বকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে করোনাভাইরাস। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ৬৮ হাজার প্রায়। তবে প্রায় পৌনে ১ কোটি রোগী এরই মধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।

"