প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১২ জুলাই, ২০২০

১০ জেলায় বন্যার অবনতির আশঙ্কা

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র গতকাল শনিবার জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, নাটোর, সিলেট, সুনামগঞ্জ এবং নেত্রকোনা জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্রের যমুনা, গঙ্গা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীরগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদ, নুন খাওয়া ও চিলমারী পয়েন্টে যমুনা নদী, বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি ও কাজিপুর পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বিপৎসীমার ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে। অপরদিকে ধরলা নদীর পানি সমতলবৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় আপার মেঘনা অববাহিকার সুরমা নদী সিলেট পয়েন্টে পুরাতন সুরমা নদীর দিরাই পয়েন্টে এবং সোমেশ্বরী নদী, দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। দেশের ১০১টি পর্যবেক্ষণাধীন পানি সমতল স্টেশনের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৬টির, হ্রাস পেয়েছে, ৩৩টির, অপরিবর্তিত রয়েছে দুটি এবং বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে সাতটি। সারা দেশে বৃষ্টির গড় ২৫২ মিলিমিটার, মহেশখোলা ২২৩ মিলিমিটার, দুর্গাপুর ১৮২ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জ ১৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টÑ

গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় দ্বিতীয় দফায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, তিস্তা ও করতোয়া নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেয়ে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হচ্ছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার এক সে.মি. ওপরে এবং তিস্তার পানি দুই সে.মি. ওপরে অবস্থান করছিল। জেলার সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সদর উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলোতে আবার পানি উঠতে শুরু করেছে। বন্যার পানিতে আমনের বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। এতে আমন বীজের অভাবে বন্যা পরবর্তী চাষাবাদ বিঘিœত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) : ফের বন্যায় নেত্রকোনার কলমাকান্দা, নাজিরপুর, পোগলা, বড়খাপন, খারনৈ, রংছাতি, লেংগুড়া ও কৈলাটী ইউনিয়নের দুই শতাধিত গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বেশি ক্ষতির স্বীকার হয়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। উপজেলা আটটি ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট তলিয়ে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। রংছাতি ইউনিয়নের কৃষক আবুল কালাম বলেন, নতুন করে আবার বন্যার পানি দেখা দিয়েছে। বন্যায় রোপণ করা আউশ খেত, বীজতলা ও পুকুর তলিয়ে গেছে। এছাড়া গ্রামের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের ব্রজনাথপুর গ্রামের নদীভাঙন এলাকাটি গতকাল শনিবার সকালে পরিদর্শন করেছে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সহযোগিতা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভাঙন কবলিত ১৫টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : তিস্তা ও ধরলা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা, বিদ্যানন্দ, নাজিমখান ও ছিনাই ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরেছেন। চরম দুর্ভোগে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তাদের। হাজার হাজার একর ফসলি জমি এখন পানির নিচে। এসব এলাকার রোপা-আমনের বীজতলাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষ। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close