নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ জুলাই, ২০২০

ওসিদের প্রতি আইজিপি

বড়লোক হতে চাইলে চাকরি ছেড়ে দিন

বর্তমানে সরকারি বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সুন্দরভাবে জীবন চালানো যায়। একজন সরকারি কর্মচারীর ব্যয় হতে হবে তার বৈধ আয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। অবৈধ অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে বিলাসী জীবনযাপনের স্থান পুলিশের চাকরি নয়। দুর্নীতিবাজরা পুলিশে থাকতে পারবেন না। বড়লোক হতে চাইলে তারা পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করুন। বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টাব্যাপী দেশের ৬৬০ থানার ওসির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্যে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেন। একসঙ্গে দেশের সব থানার ওসির সঙ্গে কোনো আইজিপির এ ধরনের মতবিনিময় এবারই প্রথম।

আইজিপি বলেন, আপনারা নিজে অবৈধ উপায়ে কোনো অর্থ উপার্জন করবেন না, অন্য কাউকে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের সুযোগও করে দেবেন না। তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করে বলেন, ‘কোনো ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাও আপনাদের কাছে ঘুষ বা মাসোয়ারা চাইলে তা আমাকে নির্ভয়ে জানান। আমি ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে দেখব।’

বর্তমানে করোনায় পুলিশের অনন্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, গত তিন মাসে পুলিশ জনগণের সঙ্গে থেকে জনগণের কল্যাণ ও সুরক্ষার জন্য যা ক?রেছে তা সত্যিই অভূতপূর্ব। জনগণ পুলিশকে এর প্রতিদানও দিয়েছে। পুলিশ মানুষের অগাধ বিশ্বাস, সম্মান ও আস্থা অর্জন করেছে। মানুষ পুলিশকে তাদের হৃদয়ের মণিকোটায় স্থান দিয়েছে। যে মর্যাদা, যে সম্মান মানুষ পুলিশকে দিয়েছে, তা টাকা দিয়ে কেনা যায় না। বাংলাদেশ পুলিশ গত তিন মাসে যেখানে গেছে, সেখান থেকে আর পেছনে ফিরে যাবে না। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে জনগণের পুলিশ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

আইজিপি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ইচ্ছা ও অনুপ্রেরণায় বাংলা?দেশ?কে দুর্নী?তি ও মাদকমুক্ত কর?তে কাজ চলছে। সবার আ?গে পুলিশ হবে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত। দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। পুলিশকে আমরা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চাই। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশি সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমরা জনগণের পুলিশ হয়ে জনগণের সঙ্গে থাকতে চাই।’

আইজিপি বলেন, “৬৬০ থানার ওসি হলো বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিচ্ছবি। আপনাদের ওপরই বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। আপনাদের এমনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে; যাতে জনগণ আপনাদের ওপর আস্থা রাখ?তে পা?রে এবং আপনাদের প্র?ত্যেক?কে একজন ‘সোশ্যাল লিডার’ হিসেবে সম্মান করে।” আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে দায়িত্ব পালনকালে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে জীবন উৎসর্গকারী ৪৭ জন শহীদ পুলিশ সদস্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। পরিবারের উপার্জনক্ষম একমাত্র সদস্যকে হারিয়ে বিপন্ন এসব পরিবারের পাশে থেকে তাদের সুখ-দুঃখের সাথী হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন আইজিপি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close