নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৮ জুলাই, ২০২০

দেশে করোনায় মৃত্যু ২১০০ ছাড়াল

আক্রান্তে ফ্রান্সকে টপকে গেল বাংলাদেশ

এক দিনে আরো ৫৫ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া নতুন করে ৩ হাজার ২৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাতে দেশে আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৫ জন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইডিসিআর) হিসাবে বাড়ি ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ১ হাজার ৯৫৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাতে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭৮ হাজার ১০২ জনে।

এদিকে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ফ্রান্সের তুলনায় বেশি। করোনায় মৃতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ফ্রান্সে এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৯২০ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। অথচ এর কাছাকাছি সময়ে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ১৫১ জন। সুস্থতার সংখ্যার দিক থেকেও বাংলাদেশ এগিয়ে। ফ্রান্সে এ পর্যন্ত ৭৭ হাজার ৩০৮ জন সুস্থ হয়েছেন। আর বাংলাদেশে এ সংখ্যা ৭৮ হাজার ১০২ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা গতকাল মঙ্গলবার দেশে করোনা পরিস্থিতির এই সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারা দেশে টিকাদান চালু আছে। সবাই টিকা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রে আসুন।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ৮ মার্চ, তা দেড় লাখ পেরিয়ে যায় গত ২ জুলাই। সেদিন ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনে সর্বোচ্চ। আর ১৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত ৫ জুলাই তা ২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরমধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

অনলাইনে বুলেটিনে অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা নতুন যুক্ত একটিসহ ৭৪টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে আরো ১৩ হাজার ৪৯১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৩ হাজার ১৭৩টি। এ নিয়ে দেশে নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৪৮০টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরো ৩ হাজার ২৭ জন। ফলে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৫ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছে আরো ৫৫ জন। এ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ১৫১ জনের। আরো ১ হাজার ৯৫৩ জন নিয়ে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭৮ হাজার ১০২ জনে।

যে ৫৫ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৪৬ এবং নারী ৯ জন। এদের মধ্যে ১০ বছরের বেশি বয়সি একজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুজন, চল্লিশোর্ধ্ব ছয়জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৮ জন, ষাটোর্ধ্ব ২১ জন, সত্তরোর্ধ্ব ছয়জন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সি একজন। তাদের ২৭ জন ঢাকা বিভাগের, ১২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, দুজন রাজশাহী বিভাগের, সাতজন খুলনা বিভাগের, দুজন রংপুর বিভাগের, দুজন সিলেট বিভাগের, দুজন বরিশাল বিভাগের এবং একজন ময়মনসিংহ বিভাগের। ৩৯ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, ১৫ জন বাসায় এবং একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

গত সোমবারের বুলেটিনে জানানো হয়, করোনা রোগীদের মধ্যে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৪ হাজার ২৪৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ২০১ জনের মধ্যে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় শনাক্তের সংখ্যা কমলেও বেড়েছে মৃত্যু। দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয়, ৩০ জুনের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ৪ হাজার ১৯ জনের, যা জানানো হয় গত ২ জুলাইয়ের বুলেটিনে।

গতকাল মঙ্গলবারের বুলেটিনে জানানো হয়, নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর রোগী শনাক্ত তুলনায় সুস্থতার হার ৪৬ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close