নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ জুলাই, ২০২০

করোনায় দেশে মৃত্যু ২ হাজার ছাড়াল

আক্রান্ত বেড়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ৪১৭

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ১২০তম দিনে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়াল। আর নতুন করে ২ হাজার ৭৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া এক দিনে ১ হাজার ৯০৪ জন নতুন করে সুস্থ হয়েছেন; যা সবমিলিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৬২৫ জনে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে গতকাল রোববার এই তথ্য জানিয়েছেন অধিদফরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। ব্রিফিংয়ের তথ্যমতে, ১৩ হাজার ৯৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৪ ঘণ্টায়। আগের দিন ১৪ হাজার ৭২৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৬২টি নমুনা। দেশে ৭১টি ল্যাবের (পরীক্ষাগার) মধ্যে ৬৪টির পরীক্ষার ফল পাওয়া গেছে। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তের ঘোষণা আসে। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে অনুরোধ করেন অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, করোনাকালে বাসায় থাকুন, সুস্থ থাকুন।

তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে আরো ১৩ হাজার ৯৬৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় আগের সংখ্যা মিলিয়ে ১৩ হাজার ৯৮৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৬২টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরো ২ হাজার ৭৩৮ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরো ৫৫ জন। এ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৫২ জনের।

২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের ১৯ জন ঢাকা বিভাগের, ১৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, একজন রাজশাহী বিভাগের, ছয়জন খুলনা বিভাগের, পাঁচজন বরিশাল বিভাগের, দুজন সিলেট বিভাগের, আটজন রংপুর বিভাগের এবং একজন ময়মনসিংহ বিভাগের। ৪১ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বাসায়। এদের মধ্যে ১ থেকে ১০ বছরের একজন, ত্রিশোর্ধ্ব তিন, চল্লিশোর্ধ্ব ১৭, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৩, ষাটোর্ধ্ব ৯, সত্তরোর্ধ্ব ১২ জন।

গত শনিবার বুলেটিনে জানানো হয়, আরো ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৪ হাজার ৭২৭টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ২৮৮ জনের মধ্যে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় সেদিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমলেও লাফিয়ে বেড়েছে মৃত্যু। দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয়, ৩০ জুনের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ৪ হাজার ১৯ জনের, যা জানানো হয় গত বৃহস্পতিবারের বুলেটিনে।

গতকাল রোববারের বুলেটিনে জানানো হয়, নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ২০ শতাংশ। রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৪ দশমিক ৭২ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। সারা দেশের করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতাল সম্পর্কে তথ্যে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যার সংখ্যা ৬ হাজার ৭৫টি এবং আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১৪৯টি, সারা দেশে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১৪ হাজার ৭৭৫টি, সারা দেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৪০১টি এবং সারা দেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১ হাজার ৭৮৫টি।

আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৪৪৯ জনকে। একই সময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪৮৩ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ৩০ হাজার ৮৭২ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৪ হাজার ১৫৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৭১৫ জন।

কোয়ারেন্টাইন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে এসেছেন ২ হাজার ৮৮৭ জন। একই সময় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৫৩৫ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে গেছেন ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩২ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩ লাখ ১২ হাজার ৫৩০ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৪ হাজার ৫০২ জন।

সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে। বুলেটিনে আরো জানানো হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআরের হটলাইনে কল এসেছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৫৮৮টি। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৬ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্ল্যাটফর্ম মুক্তপাঠে অনলাইনে সেবা দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ১৬ হাজার ৪১৪ জনে। এছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে ৪ হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানো করোনাভাইরাসের ছোবলে গোটা বিশ্ব এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। তবে সাড়ে ৬৪ লাখের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close