নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ এপ্রিল, ২০২০

১০ টাকা কেজির চাল বিক্রি বন্ধ

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে কর্মহীন মানুষকে সহায়তা দিতে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির বিশেষ ওএমএস (খোলা বাজারে বিক্রি) কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানম এ তথ্য জানান। দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ওএসএমসহ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ, চুরি ও আটকের পর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত এলো। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য সচিব।

এদিকে নভেল করোনাভাইরাসের মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে থাকা প্রায় উপার্জনহীন দুস্থ মানুষদের জন্য ১০ টাকা কেজি দরের বিশেষ ওএমএসের ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মজিবর রহমানকে আহ্বায়ক করে গতকাল খাদ্য মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের এই কমিটি গঠন করে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তাহমিদুল ইসলাম এবং যুগ্ম সচিব মো. হাবিবুর রহমান হোছাইনীকে কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে। কমিটিকে বিভিন্ন খাদ্য কর্মসূচি পরিচালনার নীতিমালা পর্যালোচনা এবং মাঠ পর্যায়ে স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করে বস্তুনিষ্ট ও সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে কর্মহীন মানুষকে সহায়তা দিতে বিশেষ ওএমএসের চাল চোর ও কালোবাজারিদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে পুলিশ সুপারদের (এসপি) নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। গতকাল এই নির্দেশনা দিয়ে পুলিশ সুপারদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে খাদ্যমন্ত্রী এসপিদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, সারা দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত কেজি প্রতি ১০ টাকা মূল্যে ওএমএসের চাল বিক্রি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে কালোবাজারি বা চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রয়োগ করার জন্য আপনাকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

খাদ্যমন্ত্রী লেখেন, বর্তমানে বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশেও এর সংক্রমণ দেখা দিয়েছে এবং এর প্রতিরোধে সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ওএমএস খাতে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের মূল্য ৩০ টাকার জায়গায় ১০ টাকা নির্ধারণ করার ঘোষণা দেন। এর প্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ চালের মূল্য কেজি প্রতি ১০ টাকা নির্ধারণ করে। এরপর খাদ্য মন্ত্রণালয় সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে ঘরে অবস্থানকারী সাধারণ শ্রমজীবী, দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার, ভিক্ষুক, ভবঘুরে ও অন্যান্য সব কর্মহীন মানুষের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির কার্যক্রম গ্রহণ করে।

সাধন চন্দ্র মজুমদার লিখেছেন, ইদানীং পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, কতিপয় ব্যক্তি ওএমএসের চাল কালোবাজারে বিক্রি করছে, যা এই কর্মসূচিকে প্রশ্নবিদ্ধ ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে। এরই মধ্যে দেশের কয়েকটি জাযগায় ওএমএসের চালসহ কয়েকজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরাও পড়েছে বলে পত্রিকায় খবর এসেছে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস জনিত কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খেটে খাওয়া ও কর্মহীন মানুষের জন্য প্রদত্ত ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল নিয়ে কোনো ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলে হুশিয়ার করেছেন খাদ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় হতে এ সংক্রান্ত জিও (অফিস আদেশ) জারি করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close