নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ এপ্রিল, ২০২০

মাজেদের ফাঁসিতে ইতিহাস হবে নতুন কারাগার

২০১৫ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড থেকে স্থানান্তর করা হয় কেরানীগঞ্জে। এর তিন বছর পর ২০১৮ সালে ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করা হয়। মঞ্চ তৈরির পর কেরানীগঞ্জ কারাগারে এখনো কারো ফাঁসি কার্যকর করা হয়নি। তাই বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের ফাঁসির মাধ্যমে কারাগারে প্রথম ফাঁসি হতে যাচ্ছে। আর প্রথম ফাঁসির জন্য জল্লাদসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

ডেপুটি জেলার সমমর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, ফাঁসি যেকোনো সময় কার্যকর করা হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এ কারাগারে কোনো আসামির প্রথম ফাঁসি হতে যাচ্ছে। আর সেটি হলো বঙ্গবন্ধুর খুনি ক্যাপ্টেন মাজেদের ফাঁসি।

কারাগারের একজন জমাদার বলেন, মাজেদের ফাঁসির জন্য সবকিছু প্রস্তুত করা হয়েছে। যেহেতু এই কারাগারে এর আগে কোনো ফাঁসি কার্যকর করা হয়নি সেহেতু কয়েক দফায় ট্রায়াল দেওয়া হয়েছে। ফিলিপাইন থেকে আনা ফাঁসির রশিতে পিচ্ছিলজাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে। সবকিছু চেক করা হয়েছে। ১০ সদস্যের জল্লাদ টিমের কার কী দায়িত্ব তা মহড়ার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুই দফা এবং গতকাল শনিবার আরো এক দফা মহড়া হয়েছে।

এদিকে মাজেদের সঙ্গে পরিবারের পাঁচ সদস্যের একটি দল গত ১০ এপ্রিল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাৎ করেছেন। এর মধ্যে স্ত্রী সালেহা, স্ত্রীর বোন ও বোন জামাই, ভাতিজা ও একজন চাচা শশুর ছিলেন। এ বিষয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মাহবুবুল ইসলাম বলেন, মাজেদের পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করেছেন। তারা প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা বলেছেন মাজেদের সঙ্গে।

কারা সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর খুনি আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করতে জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি জল্লাদ টিম গঠন করা হয়েছে। এদের মধ্যে মো. আবুল হোসেন, তরিকুল ইসলাম ও সোহেল রানা ঢাকা কোন্দ্রীয় কারাগারের কয়েদি। টিমের বাকি সদস্যদের নরসিংদী ও কাশিমপুর কারাগার থেকে আনা হয়েছে। এই টিমই মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করবে।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খানকে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। খুদেবার্তা দিয়েও কোনো উত্তর মেলেনি।

এর আগে, গত ৮ এপ্রিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনি কর্নেল (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করেছেন দিয়েছেন রাস্ট্রপতি। ফলে তার ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই কারা কর্তৃপক্ষের।

গত মঙ্গলবার ভোর পৌঁনে ৪টায় বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মাজেদকে মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারী এই মাজেদ দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক ছিলেন। গত মাসের যেকোনো সময় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মাজেদ দেশে ফেরেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close