কুষ্টিয়া ও দিনাজপুর প্রতিনিধি

  ৩১ মার্চ, ২০২০

করোনা উপসর্গ : কুষ্টিয়া দিনাজপুরে ২ জনের মৃত্যু

কুষ্টিয়ার চৌড়হাসে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ৪০ বছর বয়সি এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নের তাপসি গ্রামে ফরহাদ হোসেন অপি (৪০) নামে এক ব্যক্তি জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, পরিবারের লোকজন গতকাল সকাল ৭টার দিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ডাক্তার পরীক্ষা করে দেখেন হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তি তিন দিন ধরে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ছিলেন। সিভিল সার্জন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে তিনি করানোভাইরাস আক্রান্ত হতে পারেন। পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বিষয়টি রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানো হয়েছে। আইইডিসিআর নিয়ম মেনে লাশ দাফন করা হবে। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, পেশায় ইজিবাইকচালক ওই ব্যক্তি শহরের চৌড়হাস এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। গত শুক্রবার তার সর্দি দেখা দেয়। এরপর কাশি ও শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। আজ সকালে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়ে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, ইজিবাইকচালকের পরিবারে কোনো বিদেশি নেই বলে তারা জানতে পেরেছেন। কিন্তু ইজিবাইক চালানোর সময় করোনাভাইরাসের বাহক কারো সংস্পর্শে যেতে পারেন। পরীক্ষার ফলাফল ছাড়া নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

তবে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কয়েকজনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরী জানান, মৃতের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। নমুনার প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত বাড়িটি লকডাউনই থাকবে।

এদিকে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা অফিসার সোলায়মান আলী একজনের মৃত্যুর বিষয়টি মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, একজন করোনা আক্রান্ত রোগীর মধ্যে যেসব লক্ষণ থাকে, তার সব লক্ষণই মৃত ব্যক্তিটির মধ্যে বিদ্যমান ছিল।

এ বিষয়ে দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. মো. আবদুল কুদ্দুছ জানান, মৃত ফরহাদ হোসেন ১০ দিন আগে কুমিল্লা থেকে নিজ গ্রামে আসেন। এ সময় তার জ¦র, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট থাকলেও সে ভয়ে কাউকে না জানিয়ে গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা চালান। গতকাল ভোরে সে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে মৃতবৃক্তির নমুনা সংগ্রহের জন্য আইইডিসিআরকে জানানো হয়েছে বলে জানান। তিনি আরো জানান, মৃত ব্যক্তিকে বিধি মোতাবেক যাবতীয় কার্যসম্পাদনের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানো হয়েছে। এরপর মৃত ফরহাদের বাড়িকে লকডাউন করা হয়েছে। তার বাড়ি থেকে কাউকে বের হতে বা কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সিভিল সার্জন জানান, পুরো গ্রামকে লকডাউনের আওতায় আনা যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close