প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ৩০ মার্চ, ২০২০

৩ জনের মৃত্যু সন্দেহ করোনা

বরিশালে করোনা ইউনিটে নেওয়ার পরপরই এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বগুড়ায় শিবগঞ্জে পুলিশের ব্যবস্থাপনায় করোনাভাইরাস সন্দেহে একজনের দাফন হয়েছে। এদিকে নওগাঁর রানীনগরে যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে পরিবারের দাবি, করোনা সন্দেহে চিকিৎসা না পেয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার রাতে তাদের সবার মৃত্যু হয়েছে বলে বরিশাল থেকে প্রতিবেদক মাসুদ রানা, বগুড়া থেকে আবদুস সালাম বাবু ও নওগাঁর রানীনগর থেকে আবু ইউসুফের পাঠানো খবরÑ

বরিশাল : বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নেওয়ার পরই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার রাত ১২টার পর তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর মাত্র ১৫ মিনিট আগে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। এরপর সেখান থেকে তাকে করোনা ইউনিটে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে। মৃত নিরু বেগম (৪৫) বরিশাল নগরীর কাউনিয়া পুড়ানপাড়া এলাকার মো. দুলালের স্ত্রী।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, তিন দিন আগে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। পরে জ্বর, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। অবস্থার অবনতি হলে শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। তবে তার ডায়াবেটিস এবং উচ্চরক্তচাপ ছিল বলে মুঠোফোনে জানান তার স্বজনরা। তার কোনো স্বজন বিদেশ থেকে আসেননি কিংবা তিনি বরিশালের বাইরে কোথাও যাননি। এ ছাড়া গতকাল রাত পর্যন্ত এই হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ছয়জন সন্দেহজনক রোগী চিকিৎসাধীন বলে জানান তিনি।

বগুড়া : বগুড়ার শিবগঞ্জে করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তির দাফন পুলিশের ব্যবস্থাপনায় সম্পন্ন হয়েছে। গত শনিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ময়দানহাট্টা ইউনিয়নের পাকুড়তলা মাজারের পাশে এ দাফন সম্পন্ন হয়।

এ সময় বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার (শিবগঞ্জ-সোনাতলা সার্কেল) খুদরত-ই-খুদা শুভ, উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ রিজু, থানার ওসি মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে মৃতের স্বজনসহ এলাকাবাসীকে দাফনে অংশ নিতে দেখা যায়নি।

দাফন শেষে সহকারী এসপি খুদরত-ই-খুদা ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, সকাল থেকেই নানা বাধা-বিপত্তি আর নানা নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে রাত পৌনে ৮টায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে পুলিশের উদ্যোগে লাশের দাফন সম্পন্ন করা হলো। দাফনকাজে বাধা দেওয়ার খবর শোনা মাত্রই পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য অতিরিক্ত দুই প্লাটুন স্পেশাল আর্মড ফোর্স পাঠান। কয়েকজন লোক এলাকায় ভুল বুঝিয়ে কয়েক হাজার লোক জড়ো করেন।

রানীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁর রানীনগরে ঢাকা থেকে আসা যুবক আল আমিন জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। শনিবার রাত ৮টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান তিনি। রাতেই তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তবে ওই যুবক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সন্দেহে ইউপি সদস্য মোফাজ্জল হোসেন বাচ্চু ও স্থানীয়রা তাকে গ্রামেই প্রবেশ করতে দেননি।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, করোনাভাইরাস সন্দেহে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন তিনি। রানীনগর ইউএনও আল মামুন বলেন, ওই যুবক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। তিনি মেনিনজাইটিস রোগে মারা গেছেন।

স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন। শনিবার সকালে প্রচ- জ্বর আর কাশি নিয়ে নওগাঁয় আসেন। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গ্রামবাসী তাকে এলাকায় প্রবেশ করতে বাধা দিলে তাকে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফিরিয়ে দিলে তাকে ভেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের বারান্দায় রাখা হয়। পরে ইউএনওর হস্তক্ষেপে তাকে রানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তবে অবস্থা খারাপ হলে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠান। তবে তিন হাসপাতাল ঘুরে শেষে রামেকে গিয়ে মারা যান।

মৃত যুবকের বাবা বলেন, ছেলেকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তাররা চিকিৎসা না দিয়েই রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার জন্য হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দেন। পরে বিকালে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়া হলে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই কিছু ওষুধ ও ইনজেকশন লিখে দেন চিকিৎসকরা। তাতে জ্বর না কমলেও কোনো চিকিৎসক আমার ছেলের আশপাশে আসেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close