নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৮ মার্চ, ২০২০

করোনার হানা ২০০ দেশে

মৃত্যু ২৫ হাজার ছাড়াল৪স্পেনে ২৪ ঘণ্টায় ঝড়ল আরো ৭৬৯ প্রাণ

বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। গতকাল শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭০ জন। এছাড়া মারা গেছেন ২৪ হাজার ৮৬২ জন। তবে যে হারে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে তাতে রাতের মধ্যে এ সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচেছ। বিশ্বজুড়ে করোনার চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ৬২০ জন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনা ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে ১১ মার্চ পৃথিবীব্যাপী মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

ওয়ার্ল্ড ওমিটারের তথ্যানুযায়ী, আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। সে দেশে ৮৫ হাজার ৫৯৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছে ১ হাজার ৩০০ মানুষ। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১ হাজার ৮৬৮ জন। চীনে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৮১ হাজার ৩৪০ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ২৯২ জনের। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৭৪ হাজার ৫৮৮ জন। আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও করোনায় সবচেয়ে বেশি প্রানহানি হয়েছে ইতালিতে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজারের বেশি মানুষের। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৫৮৯। সুস্থ হয়েছে ১০ হাজার ৩৬১ জন। স্পেনে আক্রান্ত হয়েছে ৫৭ হাজার ৭৮৬ জন। প্রাণ হারিয়েছে ৪ হাজার ৩৬৫ জন।

গতকাল শুক্রবার ভোর ৬টায় থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সারা বিশ্বে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৪৫৪ জন। এর মধ্যে কমপক্ষে ১৫৯ জন যুক্তরাষ্ট্রের, চীনের ৫৫ জন, দক্ষিণ কোরিয়ার ৯১, ভারতের ছয়জন, মেক্সিকোর ১১০ জন, কাজাখস্তানের আটজন, ক্যামেরুনের ১৩ জন, প্যারাগুয়ের ১১ জন ও ভুটানের একজন।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মার্কিন সিনেটে ২ লাখ কোটি (দুই ট্রিলিয়ন) ডলারের বিল পাস হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মহামারিতে চাকরি হারানো কর্মী ও ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে পাস হওয়া হওয়া সবচেয়ে বড় অঙ্কের বিল এটি।

স্পেনে মৃত্যুর মিছিলে ২৪ ঘণ্টায় ঝড়ল আরো ৭৬৯ প্রাণ

প্রাণঘাতী করোনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে স্পেনে। ইউরোপের এই দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরো ৭৬৯ জন। গতকাল শুক্রবার স্পেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় স্পেনে করোনায় রেকর্ড আরো ৭৬৯ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৫৮ জনে।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর দেশটিতে এক দিনে সর্বোচ্চ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে গত ২৪ ঘণ্টায়। আগের ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৩৮ জনের প্রাণহানির রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে গতকাল শুক্রবারের এই প্রাণহানি।

এছাড়া দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ৭ হাজার ৮৭১ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন; যা নিয়ে দেশটিতে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৪ হাজার ৫৯ জনে। গত বৃহস্পতিবারও এই সংখ্যা ছিল ৫৬ হাজার ১৮৮ জনে।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনার ভয়াবহ প্রকোপ শুরু হয়েছে ইতালি। দেশটির স্বাস্থ্য খাতের কর্মীরা করোনা সংক্রমিতদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। করোনায় প্রাণহানিতে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ইতালি এবং স্পেন। ইতালিতে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৮ হাজার ২১৫ এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৫৮৯ জন।

গত বৃহস্পতিবার স্পেনে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দেশটির সরকার বলেছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ও প্রাণহানি ঠেকাতে মেডিকেল সরঞ্জামের সরবরাহ দিতে গিয়ে প্রকৃত যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছে। করোনার রোগীদের জন্য ইতোমধ্যে চীন থেকে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সামগ্রী সংগ্রহ করেছে দেশটি।

তবে চীন থেকে করোনা চিকিৎসা সামগ্রী বেশি দামে ক্রয় এবং প্রতারণার শিকার হতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্পেনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হলেও এখন বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। সংক্রমণ এবং প্রাণহানিতে চীনকেও ছাড়িয়ে ইতালি এবং স্পেন।

চীনে এই ভাইরাসে ৮১ হাজার ৩৪০ জন আক্রান্ত হলেও যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ৬১২ জনে। এছাড়া দেশটিতে মারা গেছেন ১ হাজার ৩০১ জন। চীনে মারা গেছেন ৩ হাজার ২৯২ জন। ইতালিতে মারা গেছেন ৮ হাজার ২১৫ জন।

বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭০ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া মারা গেছেন ২৪ হাজার ৮৬২ জন। তবে বিশ্বজুড়ে করোনার চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ৬২০ জন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close