আদালত প্রতিবেদক

  ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

১৫ দিনের রিমান্ডে পাপিয়া দম্পতি আদালতে ভিড়

জাল টাকা উদ্ধার, অস্ত্র ও মাদকের তিন মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান ও মোহাম্মদ জসীম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে বিমানবন্দর থানার জাল টাকা উদ্ধারের মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান পাঁচ দিন, শেরেবাংলা নগর থানার অস্ত্র ও মাদক আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীম পাঁচ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে, শামীমা নূর পাপিয়াকে দেখতে আদালতে ভিড় করেছেন অনেকেই। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এ সময় পাপিয়াকে দেখতে আদালতে ভিড় করেন বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ দিন বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে আদালতের এজলাসে হাজির করা হয় পাপিয়াকে। এরপর কাঠগড়ার পাশে একটি চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায় তাকে। এ সময় পাপিয়াকে না দেখতে পেয়ে সেখানে উপস্থিত বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী, আদালতের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বলেন, তাকে কাঠগড়ায় উঠানো হচ্ছে না কেন?

বিচারক এজলাসে আসেন ৩টা ৪৫ মিনিটে। এরপর পাপিয়াকে কাঠগড়ায় উঠানো হয়। ছবি তুলতে চাইলে আসামি শেখ তায়্যিবা এক সাংবাদিককে বলেন, ‘আপনি ছবি উঠাচ্ছেন কেন?’

বিমানবন্দর থানার মামলায় গ্রেফতার চারজন আসামি হলেও শেরেবাংলা নগর থানার মামলার আসামি কেবল পাপিয়া দম্পতি। এর আগে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। সেখানে জাল টাকা উদ্ধারের মামলায় ১০ দিন, অস্ত্র ও মাদক মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানোপূর্বক ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর হাকিম শাহীনুর রহমান তাদের গ্রেফতার দেখান ও আবেদন মঞ্জুর করেন।

অন্যদিকে তিন মামলায়ই রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী। আদালত তা মঞ্জুর করেননি। শুনানি শেষে আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রিমান্ড আবেদনের প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লখ করে, পাপিয়াসহ চার আসামি সংঘবদ্ধভাবে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চোরাচালান, জাল নোটের ব্যবসা, চাঁদাবাজি, তদবির বাণিজ্য, জমি দখল-বেদখল, অনৈতিক ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এবং আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত বৈদেশিক মুদ্রার উৎস ও জাল টাকা তৈরি চক্রের সক্রিয় সদস্যসহ মূলহোতাকে গ্রেফতার, আসামিদের নিয়ে পুলিশ অভিযান পরিচালনা ও ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন।

এর আগে গত শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গ্রেফতার অন্যরা হলেন পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন, সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবা। তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়। গ্রেফতারের পর ওইদিন রাতেই নরসিংদীর বাসায় এবং রোববার ভোরে হোটেল ওয়েস্টিনে তাদের নামে বুকিং করা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে অভিযান চালানো হয়। এছাড়া ফার্মগেট এলাকার ২৮ নম্বর ইন্দিরা রোডে অবস্থিত রওশন’স ডমিনো রিলিভো নামক বিলাসবহুল ভবনে তাদের দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ ও নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করে র‌্যাব। পরে রোববার দল থেকে পাপিয়াকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close