ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি

অনন্য উচ্চতায় মুশফিক

পাকিস্তান যাওয়ার বিষয়ে শুরু থেকেই আপত্তি ছিল মুশফিকুর রহিমের। শেষ পর্যন্ত সফরে যাননি তিনি। বাংলাদেশ দল যখন রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে নিজেদের বাঁচাতে লড়ছিল, তখন মুশফিক খেলেছিলেন সিসিএলে। সেখানে হেসেছে তার ব্যাট। করেছিলেন শতক। ছন্দটা চলমান ঢাকা টেস্টেও বয়ে আনলেন মুশি। গতকাল দুপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম শতক। শেষ বিকালে যা রূপ দিলেন দ্বিশতকে। এ নিয়ে তৃতীয়বার সাদা পোশাকে ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন মুশি। শতকের মতো দ্বিশতকও তিনি ছুঁয়েছেন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে। তার উদ্যাপনটাও হলো দেখার মতো। নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে ব্যাট দিয়ে হাওয়ায় শট নিলেন।

এমনটা করেছিলেন সেঞ্চুরির পর। কিন্তু দ্বিশতকের উদ্যাপন চলল অনেকক্ষণ ধরে। ব্যাট-হেলমেট মাটিতে রেখে দুই হাত দিয়ে খামচে দিলেন, মুখে যেন বাঘের হিংস্রতা। উচ্ছ্বাসের শেষ পর্বে সিজদাহ দিয়েছেন মুশি। পাকিস্তান সফরে না যাওয়ায় তাকে ঘিরে যে সমালোচনা-বিতর্কের যে ঝড় উঠেছিল, তার জবাব ব্যাট হাতেই দিলেন মুশফিক।

শতক ও দ্বিশতক আগের সব কটি ছিল উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ভূমিকায়। আজ মুশি দুটোরই স্বাদ পেলেন শুধু ব্যাটসম্যান ভূমিকায়। জল অনেক দূর গড়ানোর পর গত অক্টোবরে উইকেটের পেছন থেকে সরে দাঁড়ান মুশফিক। ভারত সফরে করেন দুই হাফসেঞ্চুরি। চাপ কমিয়ে নির্ভার হওয়া মুশি একবার তো সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও হোঁচট খেয়েছিলেন আট রানের জন্য।

সেই হতাশা গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কাটিয়ে উঠলেন। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বার করলেন দ্বিশতক। তার অন্য ডাবল সেঞ্চুরিটা ছিল ২০১৩ সালের মার্চে। গল টেস্টে কাঁটায় কাঁটায় দুশো রানে আউট হয়েছিলেন। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুবারই অজেয় থাকলেন তিনি। প্রথমবার ২১৯ রানে অপরাজিত থাকা মুশি এবার ২০৩ রানে নট-আউট।

ছয় উইকেটে ৫৬০ রানে ইনিংস ঘোষণা করেন বাংলাদেশ মুমিনুল হক। রাজসিক ইনিংসটা খেলার পথে মুশি সবচেয়ে বড় সঙ্গটা পেয়েছেন এই অধিনায়কের কাছ থেকেই। মুমিনুলকে নিয়ে গড়েন চতুর্থ উইকেটে ২২২ রানে জুটি। দুজনের আগের সর্বোচ্চ জুটিটা ছিল ২৬৬ রানের। সেটাও এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, ২০১৮ সালে।

সেই টেস্টে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিক। এখন হলো দ্বিশতকের হ্যাটট্রিক। বাংলাদেশে আর কারোর দুটি দ্বিশতক নেই। একটি করে ডাবল সেঞ্চুরি আছে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের। সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির হিসাবে মুশফিকের চেয়ে দুজনের বেশি শতক আছে। এখন তামিমের সমান নবম সেঞ্চুরি করেছেন মুমিনুল। ছয়টি শতক সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের ৬ সেঞ্চুরি।

মুশফিক শতক ছুঁঁয়েছেন ১৮ বাউন্ডারিতে ১৬০ বলে। দ্বিশতক ছুঁয়েছেন ৩১৫ বলে ২৮ বাউন্ডারিতে। সময়ের হিসাবে মোট ৪৩৪ মিনিট। এই ইনিংস খেলার পথে মুশফিক ছাড়িয়ে গেলেন টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিমকে (৪৪০৫)। মুমিনুলকে নিয়ে ভেঙেছেন তামিম-ইমরুলের ডাবল সেঞ্চুরির দুই জুটিকে। মুশি-মুমিনুলের এটা তৃতীয় দ্বিশতক জুটি। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের দুই শ ছোঁয়া জুটি হলো ১০টি। যার পাঁচটিতেই থাকলেন মুশফিক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close