নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

ঢাকার ১০ ভাগ এলাকায় ডেঙ্গুর ‘ঝুঁকি বেশি’

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মিলিয়ে কমপক্ষে ১০ শতাংশ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায় ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। গত ডিসেম্বরে পরিচালিত বর্ষা-পরবর্তী জরিপে উঠে আসা প্রতিবেদনের এই চিত্র গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরে আয়োজিত এক কর্মশালায় তুলে ধরা হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১২ শতাংশ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১০ শতাংশ ওয়ার্ডে এডিসের লার্ভার ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি রয়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে। মশার লার্ভার উপস্থিতি হিসাব করা হয় ব্রুটো ইনডেক্স বা সূচকের মাধ্যমে। জরিপে প্রতি ১০০ প্রজনন উৎসের মধ্যে ২০টি বা তার বেশিতে যদি এডিস মশার লার্ভা বা পিউপা পাওয়া যায় তাহলে সেটাকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিএনসিসির ১২, ১৬, ২৮, ৩১ ও ১ ও ডিএসসিসির ৫, ৬, ১১, ১৭, ৩৭ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে এডিসের ব্রুটো সূচক মিলেছে ২০ পয়েন্টের বেশি। উত্তরের শুধু ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এই সূচক ৩০।

উত্তরে ৪১ ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৯টি ওয়ার্ডে এ জরিপ চালানো হয়েছে। ডিএনসিসির উত্তরা এবং ধানমন্ডির দুটি ওয়ার্ডে দুটি করে এলাকায় জরিপ হয়েছে। জরিপ করা হয়েছে এসব এলাকার ১ হাজারটি বাড়ি। কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এ কে এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগের চেয়ে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ২০১৮ সালে বর্ষা পরবর্তী জরিপ হয়নি। তবে সব ইনডেক্সেই ২০১৭ সালের চেয়ে এবার উপস্থিতি কম। মশার উপস্থিতি, ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা আগের বছরের তুলনায় কম পেয়েছি।

ঢাকা জুরাইন এলাকায় নির্মিত ফ্লাইওভারের নিচে জমে থাকা পানি হয়ে উঠছে মশার আবাস। ঢাকা জুরাইন এলাকায় নির্মিত ফ্লাইওভারের নিচে জমে থাকা পানি হয়ে উঠছে মশার আবাস। মশা নিয়ন্ত্রণে মশার প্রজনন উৎসে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, যদি পানি জমতে দেওয়া না হয় তাহলে মশার লার্ভাই হতে পারবে না।

মশার যদি উৎস ধ্বংস না করা হয়। তাহলে শুধু লার্ভিসাইডিং করে মশা কমানো যাবে না। নাগরিকদের এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

জরিপ তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি বলেন, বিভিন্ন নির্মাণ এলাকায় মশার উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে নজর দিলে মশক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

তারা যদি পানির ড্রামগুলোয় বেশি দিন পানি জমিয়ে না রাখে, যদি বিষয়টিতে নজর দেয় তাহলে মশা নিধন করে মশা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

এ বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, আমরা অনেক বেশি সচেতনতামূলক কাজ চালিয়েছি। এ জরিপ মশার প্রজননস্থল চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবে।

জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আফসানা আলমগীর খান কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহলীনা ফেরদৌসী, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোমিনুর রহমান মামুন, ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক বেনজির আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close