প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

করোনা : ইল ইল খু

দক্ষিণ কোরিয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ

চীনের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাস মারাত্মক আকার ধারণ করছে। করোনার কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ জন। শনিবার নাগাদ নতুন করে ৩৫০ জন আক্রান্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫০ জনে। একদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হওয়ায় পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী চুং সায়ে-কিউন। এই পরিস্থিতিতে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানসহ যেকোনো জনসমাগম এড়িয়ে চলতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে গত শনিবার পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৪৬১ জন। এদের মধ্যে চীনের বাহিরে মারা গেছেন ১৯ জন। অন্যদিকে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৯,৯৩০ জন। দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর দায়েগুর একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং একটি হাসপাতালের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। দায়েগু ও তার পার্শ্ববর্তী চেওংডোকে ‘স্পেশাল কেয়ার জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। আতঙ্কে দায়েগু শহরের সব রাস্তা ফাঁকা হয়ে গেছে। ওই শহরে একটি চার্চে প্রার্থনায় যোগ দেওয়া দেড় শতাধিক মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ওই সম্প্রদায়ের ৯ হাজার সদস্য স্বেচ্ছায় নিজেদের ঘরে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকার এবং পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

করোনাভাইরাসের আতঙ্কে রয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রচুর বাংলাদেশি পড়াশোনা ও চাকরি করছেন। তারা বলছেন করোনা পরিস্থিতি চীনের মতো হতে পারে ভেবে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। যদিও সেদেশের সরকার ভাইরাস মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার করোনা আক্রান্ত দায়েগু শহরে ৬ বছর ধরে বসবাস করছেন এক বাংলাদেশি। তিনি গতকাল রোববার বিকালে প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, রাস্তাঘাটে লোকজন ও যানবাহন কমে গেছে। যদিও দেশটির সরকার আতঙ্কিত না হয়ে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে। আক্রান্ত কারো খবর পেলে নিরাপত্তা বাহিনীর জরুরি বিভাগে ইল ইল খু (১১৯) নম্বরে ফোন করে জানাতে বলেছে এবং সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। ইল ইল খুতে তথ্য পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে বিশেষভাবে সাজানো অ্যাম্বুলেন্স চলে আসে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিয়ে যাচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় রোগটির বিস্তারের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোগটি মূলত চীন থেকে এসেছে। তিনি বলেন, চীন ও কোরিয়ার মানুষের চেহারায় তেমন কোনো পার্থক্য নেই। অনেক চীনা নাগরিক দক্ষিণ কোরিয়ায় বিয়ে করেছেন। তারা প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়া করছেন।

ওই বাংলাদেশি আরো জানান, কারখানার শ্রমিকরা যাতে আক্রান্ত না হন এবং উৎপাদন যাতে বন্ধ না হয় সে লক্ষ্যে বেশিরভাগ কারখানায় শ্রমিকদের বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের কারখানার ভেতরেই থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয় চেওংডোর একটি মানসিক হাসপাতালে।

এদিকে ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ জন এবং মৃতের সংখ্যা ৩ জন। এতে দেশটির উত্তরাঞ্চলে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। ভাইরাস প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে জরুরি পরিকল্পনার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী গিউসেপে কন্তে।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাসে ৮ জন মারা যাওয়ার খবর জানিয়ে বলেছে দেশটিকে ২৮ জনের এ ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা গেছে। ভাইরাস আতঙ্কে ইরান থেকে ৭০০ নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে কুয়েত। লেবানন এবং ইসরায়েলেও তাদের একজন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে। এশিয়ার বাইরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা এ দেশটিতেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close