নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৯ জানুয়ারি, ২০২০

ভোটকেন্দ্রের সিসি ক্যামেরা সচল রাখার নির্দেশ

ভোটকেন্দ্র হিসেবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহার হবে, সেগুলোতে সিসি ক্যামেরা থাকলে তা সচল রাখতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওইসব সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোটগ্রহণ পরিস্থিতির রেকর্ড রাখতে চায় কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, জাতীয় সংসদের সম্প্রতি শূন্য হওয়া আসনগুলোর তফসিল নির্ধারণে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ৭ ফেব্রুয়ারি আবারও কমিশন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

ইভিএম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, বিএনপি ইভিএম দেখতে না এলে আমরা কী করব। ইভিএমের ভোটের সব ডিজিটাল রেকর্ড থাকে। যে কেউ আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন।

গাইবান্ধা-৩, ঢাকা-১০, বাগেরহাট-৪, বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচন এবং চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মঙ্গলবার কমিশনের ৬০তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এসব নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান ইসি সচিব।

ইভিএম মেশিনে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই দাবি করে সচিব বলেন, এতে কোনো জাল-জালিয়াতির সুযোগ নেই। এ মেশিন ওপেন; যে কেউ এসে দেখতে পারে। নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম দেওয়া রয়েছে। ইভিএম প্রদর্শনী ও মক ভোটিং করা হবে। তিনি জানান, ইভিএম মেশিন আমেরিকা, ব্রিটেনসহ কয়েকটা দেশের রাষ্টদূতরা দেখে গেছেন। তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। বিএনপির সন্তুষ্ট কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের বলেছি আপনারা দেখেন। তারা (বিএনপি) তো আসে না। আমরা তো ওপেন রেখেছি। না এলে কী করতে পারি। আপনারা এসে দেখেন। তারা যদি না আসেন, আমরা তাদের কিভাবে আনব?

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিজের আঙুলের ছাপ দেওয়ার মাধ্যমে ১ শতাংশ ভোটারের ব্যালট ইস্যু করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ভোটারকে চিহ্নিত করার পরই তার আঙুলের ছাপ না মিললে সেক্ষেত্রে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিজের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে ব্যালট ইস্যু করবেন। আর এমন ভোটোরের সংখ্যা ১ শতাংশের বেশি হলে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে। আরো বেশি লাগলে কমিশনের অনুমতি লাগবে। পরে চাইলে এই ইভিএমের তথ্য জানা যাবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএমে ভোটের তথ্য আমাদের কাছে ডিজিটালি সংরক্ষণ করা থাকে। মামলা করারও সুযোগ রয়েছে। কেউ ইচ্ছা করলে এ নিয়ে আদালতেও যেতে পারেন। কেউ চ্যালেঞ্জ করলে তথ্য দেখানো যাবে।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাতে বড় ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে এমন নয়। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে দুটি অতর্কিত ঘটনা ঘটেছে। ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে না জানিয়ে ওই পথসভা হয়েছিল। এটা নিয়ে দুই দলের সঙ্গে কমিশনের কথা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না করার জন্য বলা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসারকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ছোটোখাটো জিনিস থেকে এসব হয়েছে। নির্বাচনে মাইকিং ও লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ধরনের উল্লাসপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক ইলেকশন করতে গেলে এটা কন্ট্রোল করা খুবই কঠিন। তবে কমিশন ভবিষ্যতে এটা নিয়ে চিন্তা করবে। আচরণবিধিও সময়োপযোগী করারও প্রয়োজন রয়েছে। যাতে মানুষের কষ্ট না হয়, প্রার্থীরা যেন প্রচার করতে পারে। এর যৌক্তিকতা তুলে ধরে সচিব বলেন, এটি ২০০৯ সালে করা হয়েছিল। তখন কেয়ারটেকার সরকার ক্ষমতায় ছিল। সাধারণত এসব ক্ষেত্রে কি করা হয়? তারা সাধারণ জনগণ ও রাজনীতিকদের সঙ্গে খুব একটা কথা বলে আচরণবিধিমালা করে না। তখন সংলাপ হলেও সেটা অনেকটা রেসট্রিকটেট (নিয়ন্ত্রণ) ছিল। অনেকের ভেতর ভয়ভীতি ছিল। তারা আচরণবিধিমালাসহ অনেক কিছু চাপিয়ে দেয়। ২০০৯ এবং এখনকার পরিস্থিতি তো এক নয়। এখন ডেমোক্র্যাটিক গভর্মেন্ট, ডেমোক্র্যাটিক সিচুয়েশন, স্বাধীনভাবে মানুষ কথা বলতে পারে। গণতান্ত্রিক পরিবেশের পরিবর্তন হয়েছে। সেই সঙ্গে আচরণবিধিমালা আধুনিকায়ন করতে হবে। তার মানে এই নয় কাউকে অন্যায় কোনো সুবিধা দেওয়া হবে। এটি হালনাগাদ করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close