কূটনৈতিক প্রতিবেদক

  ২৬ জানুয়ারি, ২০২০

বিশ্লেষকের মত

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা দরকার

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) ঘোষিত অন্তর্বর্তী আদেশকে রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ের বড় বিজয় বলে মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এম শাহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে শুধু চীন-ভারত নয়, এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রকেও বাংলাদেশের পাশে দরকার। রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক আদালতের অন্তর্বর্তী আদেশের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান। আইসিজের আদেশে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধ এবং গণহত্যার প্রচেষ্টা বা ষড়যন্ত্র না করার জন্য বলা হয়। এ আদেশকে ‘রোহিঙ্গা, মানবতা, গাম্বিয়া এবং বাংলাদেশের বিজয়’ বলে অভিহিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

কূটনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান বলেন, মিয়ানমার শুরু থেকেই গণহত্যার কথা অস্বীকার করে আসছিল। আন্তর্জাতিক আদালতে যখন বিচার শুরু হয়, তখনো মিয়ানমার অপরাধের কথা অস্বীকার করে। কিন্তু আদালতে দাঁড়িয়ে (মিয়ানমারের নেত্রী) অং সান সু চি অপরাধ না হওয়ার পক্ষে শক্ত যুক্তি তুলে ধরতে পারেননি। অন্যদিকে গাম্বিয়া যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। এটিই রোহিঙ্গাদের পক্ষে সুবিধা এনে দেয়। আদালতের আদেশ রোহিঙ্গা জাতিসত্তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে বলে বিশ্বাস করি।

রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ চালিয়ে মিয়ানমার বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে ১২ লাখেরও বেশি শরণার্থীর বোঝা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এ শিক্ষক বলেন, চূড়ান্ত রায় হতে বহু বছর লেগে যেতে পারে। কিন্তু প্রাথমিক রায়ে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে যে নির্দেশনা এসেছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন দরকার। রায়ের কারণেই আন্তর্জাতিক মহলকে পাশে পাওয়ার পথ আরো পরিষ্কার হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় চীন-ভারত-রাশিয়ার কূটনৈতিক ও অন্য স্বার্থের কারণে রোহিঙ্গা সমাধান জটিল হয়ে আছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, চীন-ভারত চাইলে সমাধান হতে পারত আগেই এক্ষেত্রে রাশিয়াও বড় ফ্যাক্টর। তারা নিজের স্বার্থের কারণে রোহিঙ্গা সংকটকে গুরুত্ব দেয়নি। চীনের বড় স্বার্থ মিয়ানমারে। ভারত বাংলাদেশের চেয়ে মিয়ানমারকে আপন জানে। এই পরিস্থিতির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগ করা খুবই জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়ে চীনকে বাগে আনতে পারলে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সহজ হবে। এটি আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। কারণ আন্তর্জাতিক মহলের চাপ প্রয়োগ ছাড়া এ সমস্যার সমাধান হবে না।

তিনি আরো বলেন, রাশিয়া আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কালীন মিত্রদেশ, বাংলাদেশের প্রগতিশীল শক্তির সঙ্গে রাশিয়ার ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। রোহিঙ্গা ইসুতে এই সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে রাশিয়াকে বাংলাদেশের পক্ষে রাখতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close