নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ জানুয়ারি, ২০২০

নারীর সুরক্ষায় ‘ডিভাইস’

ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে ‘অ্যান্টি রেপ ডিভাইস’ নারীদের সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে। ধর্ষকদের মধ্যেও এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়াবে। সহজে আর কেউ ধর্ষণে উদ্বুদ্ধ হবে নাÑ এমনটাই মনে করেন মানবাধিকার কর্মী, নারী নেত্রীসহ বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, ‘অ্যান্টি রেপ ডিভাইস’ ব্যবহারে রাষ্ট্রের সহযোগিতা প্রয়োজন। এই ডিভাইসের সঙ্গে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জাতীয় জরুরি সেবা সংযুক্ত করতে পারলে এর সুফল পাওয়া যাবে।

‘অ্যান্টি রেপ ডিভাইস’ কী? : এটি একটি ধর্ষণবিরোধী তারবিহীন যন্ত্রাংশ যা নারীরা জুয়েলারি (অলঙ্কার) হিসেবে বা পরিধেয় বস্ত্রের সঙ্গে ব্যবহার করে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধ করতে পারে। ধর্ষণ প্রতিরোধে বেশ কয়েকটি ডিভাইস তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে সাংকেতিক বার্তা দিতে পারদর্শী এমন একটি ডিভাইস বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে বলে তথ্য ও প্রযুক্তিবিদরা দাবি করেন। প্রথম দিকে আফ্রিকা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসব ডিভাইস প্রস্তুত করেন। পরে ২০১৭ সালে এগুলো বাণিজ্যিকভাবে তৈরি শুরু হয়। আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও ভারতে এই ডিভাইসগুলো ব্যাপক হারে বিক্রি হয়ে থাকে।

‘অ্যান্টি রেপ ডিভাইস’ যেভাবে বহন করা যায় : এটি একটি ক্ষুদ্র ডিভাইস। হাত ঘড়ি কিংবা আঙুলে রিং হিসেবে পরা যায়, গলায় যেকোনো চেইনের সঙ্গে বা কোমরে রাখা যায়, আবার পরিধেয় বস্ত্র এবং ব্যাগের ভেতরেও রাখা যায়।

যেভাবে কাজ করে : তথ্য ও প্রযুক্তিবিদ তানভীর হাসান জোহা বলেন, ‘এটি মূলত একটি যন্ত্রাংশ। এটির সঙ্গে অন্য একটি যন্ত্রের সংযোগ দেওয়া থাকবে। যখন ভিকটিম আক্রান্ত হবেন তখন তিনি বাটন চেপে পুলিশের সহায়তা চাইতে পারবেন অথবা স্বয়ংক্রিয়ভাবেও পুলিশের কাছে বার্তা চলে যেতে পারে। তখন পুলিশ ডিভাইসটি ট্র্যাকিং করে ভিকটিমকে উদ্ধার করবে। এছাড়া, এটি অ্যালার্ম দিতে সক্ষম। মোবাইল ফোনের সঙ্গে সংযোগ করা গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুলিশের কাছে ফোন যাবে, অথবা জাতীয় জরুরি সেবার সঙ্গে সংযোগ দেওয়া থাকলে সেখানেও কল চেলে যাবে।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। তবে ডিভাইসটি সবার পক্ষে ব্যবহার করা সম্ভব কিনা সেটিও ভেবে দেখতে হবে।

ডিভাইস সরবরাহের অনুমোদনের অপেক্ষায় : দেশে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে নারীদের ‘অ্যান্টি রেপ ডিভাইস’ সরবরাহের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও চিলড্রেনস চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন রিট দায়েরের পর গত ১৯ জানুয়ারি এ বিষয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই রিটের শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার মো. আবদুল হালিম।

ব্যারিস্টার আবদুল হালিম বলেন, আমরা মনে করি ‘অ্যান্টি রেপ ডিভাইস’ নারীরা ব্যবহার করলে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ কমে আসবে। এটি নারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গলায় বা কোমরে পরে রাখতে পারবেন। কখনো অ্যাটাক হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এটি অ্যালার্ম দেবে এবং ৯৯৯ -এ কল চলে যাবে। এভাবে ভিকটিমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন। আমরা আদালতকে এটা বলেছি। আদালত আমাদের শুনানি শেষে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞ কমিটি ৬০ দিনের মধ্যে তাদের মতামত আদালতে দাখিল করবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close