নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ জানুয়ারি, ২০২০

মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত

চাকরিতে প্রথম-অষ্টম কোটাও থাকবে না

সরকারি চাকরিতে অষ্টম থেকে তার ওপরে অর্থাৎ প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা থাকবে না বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে মন্ত্রিসভা। কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র নিয়ে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) স্পষ্টীকরণ চাইলে ১ম-৮ম গ্রেডের নিয়োগে কোটা নিয়ে এ মতামত দেওয়া হয়। এ ছাড়া আকাশপথে পরিবহনের সময় দুর্ঘটনায় যাত্রী আহত বা নিহত হলে এবং ব্যাগেজ নষ্ট বা হারিয়ে গেলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়িয়ে এ-সংক্রান্ত আইনের খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। আগে আকাশপথে পরিবহনের সময় যাত্রীর মৃত্যু বা আঘাতপ্রাপ্ত হলে ক্ষতিপূরণ ছিল ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা। প্রস্তাবিত আইনে এই ক্ষতিপূরণ ১ কোটি ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৩৪ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘নন-ক্যাডার অষ্টম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বণ্টন পদ্ধতি স্পষ্টকরণের লক্ষ্যে তৎ-সংক্রান্ত পরিপত্র সংশোধনের প্রস্তাব’ অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভা শেষে সচিবালয়ে ফিরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভা

সিদ্ধান্ত দিয়েছে, নবম থেকে যত ওপরের গ্রেডেই যাক, সরাসরি নিয়োগে কোনো কোটা পদ্ধতি থাকবে না।

চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। কোটা বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বলা হয়, ৯ম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩ম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। ৯ম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩ম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, পিএসসি গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি ৮ম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে নাকি আগের কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে, তা স্পষ্ট করার অনুরোধ জানিয়েছিল।

কোটা বাতিলের পরিপত্রে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগে কোটা না রাখার বিষয়টির উল্লেখ থাকলেও ৮ম-১ম গ্রেডে নিয়োগে কোটার বিষয়ে কিছু বলা ছিল না। পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আ ই ম নেছারউদ্দিন জানান, অষ্টম থেকে ওপরের গ্রেডেও কমিশন থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আকাশপথে পরিবহনের ক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনায় যাত্রীর মৃত্যু বা আঘাতপ্রাপ্ত হলে এবং ব্যাগেজ নষ্ট বা হারানোর ক্ষেত্রে ওয়ারশ কনভেনশন-১৯২৯-এর আলোকে দেশে বর্তমানে প্রচলিত দ্য ক্যারেজ বাই এয়ার অ্যাক্ট, ১৯৩৪, দ্য ক্যারেজ বাই এয়ার (ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন) অ্যাক্ট, ১৯৬৬ এবং দ্য ক্যারেজ বাই এয়ার (সাপ্লিমেন্টারি কনভেনশন) অ্যাক্ট, ১৯৬৮ আছে। এই তিনটি আইনের আলোকে প্রাণহানি, আঘাত ও ব্যাগেজ নষ্ট বা হারানোর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ খুবই নগণ্য ছিল এবং ক্ষতিপূরণপ্রাপ্তি সময়সাপেক্ষ ছিল। এ কারণে ২০১৭ সালে নেপাল বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা নামমাত্র ক্ষতিপূরণ পাবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে ১৯৯৯ সালে মন্ট্রিল কনভেনশন গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ উক্ত কনভেনশনে ১৯৯৯ সালেই স্বাক্ষর করেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close