চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৯

চট্টগ্রামে কাদের

অতিথি পাখিদের স্থান হবে না আওয়ামী লীগে

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অতিথি পাখিদের স্থান হবে না আওয়ামী লীগে। ত্যাগী কর্মীদের নেতা বানানো হবে। বাংলাদেশে এখন পোস্টার লাগাতে কর্মী পাওয়া যায় না। চারদিকে শুধু নেতা আর নেতা। বাংলাদেশ এখন নেতা উৎপাদন করে। সুন্দর ছবি, ব্যানারে ও পোস্টার ছাপিয়ে নেতা হওয়া যাবে না। আমরা সুশৃঙ্খল আওয়ামী লীগ চাই, সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ চাই, বিশৃঙ্খলা চাই না। সুবিধাবাদীদের দলে চাই না। গতকাল শনিবার নগরীর লালদীঘি ময়দানে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এত আঘাত, রক্তপাত ও সংঘাত সহ্য করে এগিয়ে যায় আওয়ামী লীগ। যারা ভাবেন একটা ধাক্কা দিলে আওয়ামী লীগ পড়ে যাবে। তারা বোকার স্বর্গে বাস করে। আমরাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা আওয়ামী লীগের কর্মী। তাই আমাদের কেউ রুখতে পারে না। আমরা এগিয়ে যাবই, যাব।

তিনি বলেন, আমাদের বহু কর্মী আছে। খারাপ লোকের কোনো প্রয়োজন নেই। বুয়েটে আবরারকে যারা হত্যা করেÑ এইসব কর্মীর আমাদের প্রয়োজন নেই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কথায় কথায় যারা কলহ করে, মারামারি করে এই কর্মীর আমাদের প্রয়োজন নেই। যারা রাজশাহীতে অধ্যক্ষকে পানিতে ফেলে দেয় এই কর্মীর আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। মাস্তানি করে, গডফাদারগিরি করে নেতা হওয়া যাবে না।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, আমি অনেক সম্মেলনে গেছি কিন্তু চট্টলার মতো এত সুশৃঙ্খল সম্মেলন আর কোথাও দেখিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এক সময় সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত দেশে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দেশ।

আওয়ামী লীগে এখন সুদিন বইছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সুদিনের বাতাসে গা ভাসিয়ে দলে এখন অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। তাদের খুঁজে বের করে দল থেকে ছাঁটাই করতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতি দুর্নীতিবাজ খালেদা জিয়া ও তার দুর্নীতিবাজ ছেলে তারেকে সীমাবদ্ধ। যাদের রাজনীতি দুর্নীতিবাজদের ওপর নির্ভরশীল, তাদের থেকে দেশের জনগণ কী আশা করবে। তার নমুনা তাদের আইনজীবীরা দিয়েছেন, সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টে হট্টগোল করে। খালেদার মুক্তির আগে যে দল আইন মানে না। তাহলে খালেদা মুক্তি পেলে তারা কী করবে, তা চোখ বন্ধ করে বলা যায়। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে দুর্নীতিবাজ কুলাঙ্গার তারেক রহমানের স্থান এই পবিত্র বাংলার মাটিতে হবে না।

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এর আগে সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কেন্দ্রীয় উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া।

মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, মাহফুজুর রহমান মিতাসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকরা। সম্মেলনে উত্তর চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীর সমাগম হন। দ্বিতীয় পর্বে বিকালে নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় কাউন্সিলর অধিবেশন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close