নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ নভেম্বর, ২০১৯

ক্ষুদ্রঋণে দারিদ্র্য লালন পালন হয় : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সমালোচনা করে বলেছেন, এর মাধ্যমে দারিদ্র্যবিমোচন হয় না, বরং দারিদ্র্য ‘লালন-পালন’ করা হয়। তিনি বলেন, একটা সময় ছিল, কেউ কেউ আমরা দেখেছি ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে খুব বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এক সময় আমরাও এটাকে সমর্থন দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এর ফলে বোধহয় মানুষ দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠতে পারবে। কিন্তু আমরা বিষয়টা আরো গভীরভাবে দেখলাম যে, আসলে এর মাধ্যমে ঠিক দারিদ্র্যবিমোচন হয় না, দারিদ্র্য লালন পালন হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত উন্নয়ন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে কৃষকদের কল্যাণ ও দারিদ্র্য নিরসন এবং কৃষির উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্মাননা স্মারক মতিয়া চৌধুরীর হাতে তুলে দেন। পুরস্কার হিসেবে একটি সম্মাননাপত্র, ক্রেস্ট এবং ৫০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে কেউ কেউ ক্ষুদ্রঋণের প্রবক্তা সেজে অনেক ভালো নামটাও করে ফেলেছেন। কিন্তু দেখা যায় যে হয়ত নিজে নাম কামিয়েছেন, কিন্তু দেশের মানুষ ততটা তার সুফল পেতে পারেনি। এটা হলো বাস্তব।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই তখনকার বিআরডিবির মাধ্যমে এ ঋণ দেওয়া শুরু করেছিলেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষকে কীভাবে সমবায়ের মাধ্যমে একত্রিত করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করে কীভাবে তাদের দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে আনা যায়, সেই পরিকল্পনাটাই জাতির পিতা নিয়েছিলেন। আর দারিদ্র্যবিমোচনে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় একটা প্রচেষ্টা নিয়েছি। দারিদ্র্যবিমোচন করতে হলে কী কী কাজ করা যায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা আমাদের কর্ম পরিকল্পনা নিই। আমাদের মূল শত্রু হচ্ছে দারিদ্র্য। কাজেই দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। দারিদ্র্যের হাত থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের কর্মপরিকল্পনা।

বিশ্বে বাংলাদেশকে এখন ‘উন্নয়নের বিস্ময়’ বলা হয় মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাকে অনেকে জিজ্ঞেস করে যে এত দ্রুত উন্নয়ন করলেন, ম্যাজিকটা কী। আমার এখানে উত্তর খুব স্পষ্ট?। ম্যাজিক বলে কিছু না। দেশকে ভালোবাসা, মানুষকে ভালোবাসা আর নিজের দেশকে জানা, নিজের দেশের জন্য কাজ করা। আমরা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে দেশের জন্য কাজ করছি।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন এবং পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আর স্বাগত বক্তব্য দেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মইনুদ্দিন আবদুল্লাহ। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং মিশন প্রধানসহ বিদেশি কূটনীতিক এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

গ্রামীণ এলাকা থেকে পিকেএসএফের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসহ, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, গবেষণা ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং সেবামুখী সংগঠনসহ ১৩০টি সংস্থার মোট ১৯০টিরও বেশি স্টল মেলায় স্থান পেয়েছে। মেলায় রয়েছে তৃণমূল পর্যায়ের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কৃষি, খাদ্য এবং প্রচলিত পণ্য। এছাড়া সাত দিনে পাঁচটি সেমিনারও হবে মেলায়। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close