নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ অক্টোবর, ২০১৯

অশান্ত ক্যাম্পাস

লোভে রাজনীতিতে জড়াচ্ছেন মেধাবীরা

সামনে অপেক্ষা করে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। কিন্তু তারপরও কেন অপরাজনীতিতে জড়ানো? বুয়েটের শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেছেন, এর মূলে রয়েছে ক্ষমতা, ক্যাম্পাসে বাড়তি সুবিধার লোভ আর নেতাদের চাপ। তাছাড়াও শুধুই সিলেবাসে আবদ্ধ থাকাও একটি বড় কারণ। এসব কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ। কমছে সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণও। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ তারই সহপাঠীদের হাতে নৃশংসভাবে নিহত হওয়ার পর সবার মনে একটাই প্রশ্ন। বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ থাকা সত্ত্বেও কিসের প্রয়োজনে ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন তারা? কে, কারা, কোনো প্রক্রিয়ায় এই পথে আনছেন তাদের? এসব প্রশ্ন ছিল ছাত্র-শিক্ষকদের কাছে।

এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বড় ভাইয়েরা কল দিয়ে বলেন সবাই নিচে নামো। এখন মিছিল আছে। মিছিলে সবাইকে যেতে হবে। যদি না যাস্ তাহলে সমস্যা আছে। ঢাকা শহরে আর কোথাও থাকার জায়গা নেই দেখেই আমরা হলে থাকি। এ কারণে তখন বড় ভাইদের কথা শোনা ছাড়া কিছু করার থাকে না।’

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এটা আসলে অনেক দিন ধরেই চলে আসতেছে। যারা এতকম পলিটিক্স করে দেখা যায় একটা রুম নিয়ে একজনই থাকে। পাস করার পরও যতদিন ইচ্ছা থাকে। হল কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থাই নেয় না।

অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রথমে জিজ্ঞাসা করে কে কে যেতে চাও? যারা যাওয়ার যায়। কারণ তারা দেখে বড় ভাইয়েরা নানা সুবিধা নিতেছে এবং হলে আধিপত্য দেখাইয়া চলতেছে। ক্যাফেতে ফ্রিতে খাইতেছে। এ রকম অনেক পলিটিক্যাল পাওয়ার দেখাইতেছে।’

বুয়েটের এআরআই অধ্যাপক ড. মাহবুব আলম বলেন, যেহেতু এখানে পলিটিক্যাল কালচার বাংলাদেশে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালওয়ে আছে তাহলে এখানেও (বুয়েট) করবে। পলিটিক্স করতে গেলে সে মনে করে যে আমার অনেক ক্ষমতা। যারা টেকনিক্যাল পড়ালেখা করে তাদের মানবিক দিকগুলোতে ঘাটতি থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গেলে কিন্তু মানবিক বিজ্ঞানে বেশি জোর দেওয়া হয় না। সোসাইটির সঙ্গে সম্পৃক্ততায় বেশি জোর দেওয়া হয় না। যে কারণে ছাত্রদের মাঝে মানবিক মূল্যবোধটা তেমন ডেভেলপ হয় না। আমি মনে করি, এখন থেকে প্রতিটি হলে সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া উচিত।

সুতরাং ছাত্র শিক্ষকদের কথায় বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থীদের নেতিবাচক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার কয়েকটি কারণ পাওয়া গেল। ক্ষমতার রাজনীতির মোহ, লেজুরবৃত্তিক রাজনীতির চাপ, একাডেমিক লেখপড়ার বাইরে এক্সট্রা কারিকুলাম একটিভিটিজ ও কাউন্সিলিংয়ের ভীষণ অভাব। তাই তারা বলেছেন, পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে হলে এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close