পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা থেকে

  ১৫ অক্টোবর, ২০১৯

আবার বাঙালির ঘরে নোবেল

২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল জিতেছেন তিন মার্কিন অর্থনীতিবিদ। নোবেল বিজয়ীরা হলেন অভিজিৎ ব্যানার্জি, এস্তার দুফলো ও মাইকেল ক্রেমার। তাদের মধ্যে অভিজিৎ ব্যানার্জি ভারতের বাঙালি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। অমর্ত্য সেনের পরে দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল জয়ের গৌরব অর্জন করেন তিনি। আর বাঙালি হিসেবে সব মিলিয়ে চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে নোবেল পেলেন অভিজিত। অভিজিতের সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল জিতেছেন তার স্ত্রী ফরাসি বংশাদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এস্তার দুফলো ও মার্কিন অর্থনীতিবিদ ক্রেমার। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস গতকাল সোমবার অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করে। বৈশ্বিক দারিদ্র্য দূরীকরণে পরীক্ষামূলক গবেষণার জন্য তাদের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেন ও ড. মুহম্মদ ইউনূসের পর চতুর্থ বাঙালি হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেলেন কলকাতায় জন্ম নেওয়া অভিজিৎ ব্যানার্জি। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত তিনি। প্রথম বাঙালি হিসেবে নোবেল পান বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি নোবেল জিতেন সাহিত্যে। আর একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে নোবেল জিতেছেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহম্মদ ইউনূস। তিনি নোবেল জিতেন শান্তিতে।

অভিজিতের স্ত্রী মার্কিন অর্থনীতিবিদ এস্তার দুফলো ফরাসি বংশোদ্ভূত। দ্বিতীয় নারী অর্থনীতিবিদ হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন তিনি। সর্বকনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়ার কৃতিত্বও দেখালেন দুফলো। ৪৬ বছর বয়সে নোবেল জিতলেন দুফলো। আর তার স্বামী অভিজিৎ জিতলেন ৫৮ বছর বয়সে। অভিজিৎ-দুফলো দম্পতির সঙ্গে নোবেল জেতা আরেক অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট?স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে অধ্যাপনা করেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুলের পর প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকেই অর্থনীতিতে স্নাতক হন অভিজিৎ। অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়া আরেক বাঙালি অমর্ত্য সেনও ওই কলেজে পড়াশোনা করেছেন। স্নাতকোত্তর করেন দিল্লির জহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি থেকে। অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষ করে চলে যান বিদেশে। ১৯৮৮ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন। এরপরই অধ্যাপনার জগতে প্রবেশ। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি ও হার্ভার্ডে অধ্যাপনার পাশাপাশি ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস নিয়ে পরীক্ষামূলক গবেষণা চলতে থাকে। তারপর ম্যাসাচুসেট?স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে এখনো পড়ান তার প্রথম স্ত্রী অরুন্ধুতি। তার দ্বিতীয় স্ত্রী এস্তার দুফলোও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিরই অর্থনীতির অধ্যাপিকা।

কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুল ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল জয়ের খবরে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, অর্থনীতিতে নোবেল জয়ের জন্য অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে হার্দিক অভিনন্দন। আরেক বাঙালি দেশকে গর্বিত করলেন। আমরা উচ্ছ্বসিত। বিশ্ব দারিদ্র্য দূরীকরণে কী কী পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, সেই গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবেই অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল জয় বলে জানা যাচ্ছে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন্টর গ্রুপেরও সদস্য ছিলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close