জাতিসংঘে প্রাকৃতিক তন্তু যেমন পাট ও সিসালের ব্যবহার বিষয়ক একটি নতুন প্রস্তাব ৭৪তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটিতে বিবেচনার জন্য পেশ করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন দ্বিতীয় কমিটির প্লেনারি সভায় ‘কৃষি উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি’ বিষয়ক অ্যাজেন্ডার (এজেন্ডা-২৪) আওতায় গত শুক্রবার এই প্রস্তাব পেশ করেন।

জাতিসংঘের সদর দফতরে এ রেজল্যুশন নিয়ে আলোচনা খুব শিগগিরই শুরু হবে বলে গতকাল শনিবার জানিয়েছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশ মিশন।

পরিবেশবান্ধব প্রাকৃতিক তন্তু যেমনÑ পাট, তুলা ও সিসালের ব্যবহার বিষয়ে সদস্য দেশগুলো উৎসাহিত করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, কৃত্রিম তন্তুর বিপরীতে প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারের সুবিধার ক্ষেত্রে এখনো যথেষ্ট জনসচেতনতা সৃষ্টি হয়নি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতি ও সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে সাধারণ পরিষদে একটি রেজল্যুশন গ্রহণ করা প্রয়োজন।’

রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারের বৈশ্বিক সচেতনতা সৃষ্টিতে রেজল্যুশনটি হতে পারে একটি কার্যকর দলিল, যা শুধু উৎপাদনকারী বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্যই নয়, ভোক্তাদের জন্যও এনে দেবে প্রকৃতিকে বাঁচানোর একটি উত্তম সুযোগ। রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, এই রেজল্যুশন টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এবং পরিবেশ সুরক্ষার আবশ্যিকতাকে এগিয়ে নিতে সদস্য দেশগুলো সাহায্য করবে।

বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের নানা দিক তুলে ধরে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের সাহসী ও বাস্তবভিত্তিক নীতি-কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে কৃষি খাতে আমুল পরিবর্তন এসেছে, গ্রামীণ উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ক্ষমতায়িত হয়েছে আর ক্ষুদ্র কৃষিজীবী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা স্থানীয় ভিত্তিতে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থাপনার ফলে সুরক্ষিত রয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ শাকসবজি উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, চাল উৎপাদনে চতুর্থ এবং মৎস্য উৎপাদনে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে।

রাষ্ট্রদূত সভাকে জানান, বাংলাদেশ একসময়ের খাদ্য আমদানিকারক দেশ থেকে আজ খাদ্য রফতানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে এবং পরিবেশবান্ধব কৃষিপণ্য উৎপাদন ও তা জনপ্রিয় করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের আনা নতুন এই রেজল্যুশনকে সমর্থন করতে স্থায়ী প্রতিনিধি সব সদস্য দেশের প্রতি আহ্বান জানান এবং আশা প্রকাশ করেন এটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হবে।

"