নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

খোলাবাজার থেকে আমদানি হবে এলএনজি

দ্রুততম সময়ে দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটাতে খোলাবাজার থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। তবে এই আমদানি কবে থেকে শুরু হবে সে বিষয়ে নভেম্বরে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ-জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানির উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) আহ্বান করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৪৩টি কোম্পানি ইওআই দাখিল করে। পরে যাচাই-বাছাই করে আন্তর্জাতিক খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানির জন্য ১৭টি কোম্পানিকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখা হয়েছে। এগুলোর মধ্য থেকে দুটি কোম্পানি চূড়ান্তভাবে বাছাই করে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।

সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখা ১৭টি প্রতিষ্ঠান হলো মিতসুই অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড (জাপান), মারুবেনি করপোরেশন (জাপান), ওসাকা গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (জাপান), এওটি ট্রেডিং এজি (সুইজারল্যান্ড), ডায়মন্ড গ্যাস ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড (সিঙ্গাপুর ০৩৯১৯২), সামিট করপোরেশন লিমিটেড অ্যান্ড সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড, এক্সিলেটর এনার্জি লিমিটেড পার্টনারশিপ (ইউএসএ), জেরা কোম্পানি লিমিটেড ইংক (জাপান), ভাইটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড (সিঙ্গাপুর), ট্রাফিগুরা পিটিই লিমিটেড (সিঙ্গাপুর), উডসাইড পেট্রোলিয়াম লিমিটেড (অস্ট্রেলিয়া), গ্যাসপ্রম মার্কেটিং অ্যান্ড ট্রেডিং লিমিটেড (সিঙ্গাপুর), ইএনআই এসপিএ ইতালি, পেট্রোনাস এলএনজি লিমিটেড, সিএনওওসি (চায়না ন্যাশনাল অফশোরে অয়েল করপোরেশন), গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার ট্রেডিং অ্যান্ড মার্কেটিং লিমিটেড (চায়না), চিনেইরি মার্কেটিং ইন্টারন্যাশনাল এলপিপি (সিঙ্গাপুর) এবং শেভরন ইউএসএ (সিঙ্গাপুর ব্র্যাঞ্চ)।

খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানি হবে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ (এমএসপি) এগ্রিমেন্টের ভিত্তিতে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, এদের মধ্যে থেকে বেশ কয়েকটি কোম্পানি কাজ পেতে সুপারিশ করেছে। আর এই কারণেই কোম্পানি চূড়ান্ত করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে সর্বনিম্ন দরদাতাই এই প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হবে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংবাদমাধ্যমকে জানান, বর্তমানে দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৩৫০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে এলএনজির চাহিদা ৩০ কোটি ঘনফুট। সর্বমোট চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে পেট্রোবাংলা সরবরাহ করছে প্রায় ৩০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। বাকি ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি মেটাতেই সরকার খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমাদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে কী পরিমাণ এলএনজি গ্যাস খোলাবাজার থেকে নেওয়া প্রয়োজন তা নির্ধারণের পরই কোম্পানি চূড়ান্ত করা হবে। তবে দ্রুতই এ প্রক্রিয়া শেষ হবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. বদরুল ইমাম বলেন, সম্ভাবনাময় ব্লকে যথাসময়ে কূপ খনন করা হলে গ্যাসের এই সংকট হতো না। বর্তমানে যে ৩০ কোটি ঘনফুট এলএনজি পাওয়া যাচ্ছে তা উচ্চমূল্যে। এখন খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানিতে অতিরিক্ত ব্যয়ের বিষয়টিও বিবেচনায় থাকা উচিত।

উল্লেখ্য, এলএনজি আমদানির জন্য বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। বর্তমানে কাতার গ্যাস এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে দুটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। বছরের যেকোনো সময়ে গ্যাসের চাহিদা কমে গেলেও চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানিগুলো মূল্য পরিশোধ করতে হয়। এ বিবেচনায় এলএনজি আমদানিকারক দেশগুলো প্রয়োজনে কমবেশি ২৫ শতাংশ গ্যাস আন্তর্জাতিক খোলাবাজার থেকে আমদানি করে থাকে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির পাশাপাশি খোলাবাজার থেকেও গ্যাস আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close