পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা থেকে

  ২১ আগস্ট, ২০১৯

কাশ্মীর পরিস্থিতি কঠিন, মন্তব্য করলেন ট্রাম্প

ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যথাক্রমে নরেন্দ্র মোদি ও ইমরান খানের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, কাশ্মীরের পরিস্থিতি কঠিন। এলাকার উত্তেজনা প্রশমনে আরজি জানিয়ে দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে গত সোমবার টেলিফোনের পর টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, ‘দুজনেই তার ভালো বন্ধু। বাণিজ্য কৌশলগত পার্টনারশিপ নিয়ে এবং বিশেষত কাশ্মীরে উত্তেজনা কমাতে কথা হয়েছে। পরিস্থিতি কঠিন, তবে ভালো কথা হয়েছে।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে ট্রাম্পের ৩০ মিনিটের কথা হয়েছে। সেখানে দ্বিপক্ষীয় ও বাণিজ্যিক আলোচনা হয়েছে। এ সময় সীমান্ত-সন্ত্রাস ও হিংসার বাতাবরণের কথা তুলে ধরেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, আঞ্চলিক পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, এই অঞ্চলের বেশ কিছু নেতা ভারতবিদ্বেষী উসকানিমূলক কথা বলছেন, যা শান্তির পক্ষে উপযুক্ত নয়। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র হোগান গিডলেও বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চাপানউতোর কমানো এবং শান্তি রক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।

এর আগে, ভারতের বিরুদ্ধে ইমরান খান ক্রমাগত বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন বলে ট্রাম্পের কাছে পরোক্ষভাবে মন্তব্য করেছেন নরেন্দ্র মোদি। ভারতবিরোধী হিংসায় প্ররোচনার মধ্যে দাঁড়িয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে শান্তি সম্ভব নয় বলেও জোরের সঙ্গে জানান তিনি। আলোচনার সূত্র ধরেই পড়শি দেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পরোক্ষে তোপ দেগেছেন নরেন্দ্র মোদি। জানা গেছে, আলোচনার সময় হিংসা ও সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ তৈরির ওপরে গুরুত্ব আরোপ করেছেন মোদি। ক্রস-বর্ডার সন্ত্রাস বন্ধের পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা এবং রোগব্যাধি মুক্তির লক্ষ্যে বিশ্বের যেকোনো দেশের সঙ্গে ভারত একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত বলে তিনি জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ফ্রান্সে যাচ্ছেন মোদি। সেখানে জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলনে তিনি যোগ দেবেন। ভারত জি-৭-এর অংশীদার রাষ্ট্র। সম্মেলনের পাশাপাশি কয়েকজন রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক নির্ধারিত থাকলেও সেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসার সম্ভাবনা এখনো তৈরি হয়নি।

অন্যদিকে, বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন, অঞ্চলের কিছু নেতা উগ্র ভারতবিরোধী হিংসা এবং ঘৃণা প্রচার করছেন, যা অঞ্চলের শান্তির পক্ষে অনুকূল নয়। সন্ত্রাস ও হিংসামুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করা এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ করা ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।

অন্যদিকে, পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তানের জঙ্গি অধ্যুষিত বালাকোটকে নিশানা করেছিল ভারত। ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতের অন্ধকারে আকাশপথে হামলা চালিয়ে বালাকোটে একাধিক জঙ্গিশিবির গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বিমানসেনা। বালাকোটে সেই হামলার পর, সরকারের তরফে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের যেকোনো ধরনের আক্রমণ মোকাবিলায় ভারতীয় সেনা তৈরি। প্রয়োজনে শত্রু এলাকায় ঢুকে যুদ্ধ করতেও তৈরি। যুদ্ধের জন্য তার বাহিনী কতটা তৈরি রয়েছে, সে সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করেছিলেন স্বয়ং সেনাপ্রধান। খবর, ২০১৬ সালে উরিতে জঙ্গি হামলার পরপরই গোলাবারুদ কিনতে ১১ হাজার কোটি টাকার চুক্তি করেছে সেনা। এরই মধ্যে সেই চুক্তির ৯৫ শতাংশ গোলাবারুদ সেনাবাহিনীর হাতে চলে এসেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close