নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ আগস্ট, ২০১৯

হাইকোর্টের আরেক বেঞ্চে মিন্নির জামিন আবেদন

প্রথম দফায় ব্যর্থ হওয়ার পর হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চে জামিন আবেদন করেছেন বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। গত ৮ আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের অবকাশকালীন বেঞ্চে শুনানির পর জামিন পাওয়ার আশা না দেখে মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না আবেদনটি ফিরিয়ে নিয়েছিলেন।

সে আবেদনটিই গতকাল রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে দাখিল করা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী। ‘আজকে (রোববার) আমরা জামিন আবেদনটি কোর্টে

সাবমিট করেছি। আগামীকাল (সোমবার) সম্ভবত লিস্টে আসবে। লিস্টে আসলেই হিয়ারিং করা হবে।’

হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় মিন্নিসহ আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না আনতে পারলে জামিন হবে না, আদালতের এমন শর্তের পর গত ৮ আগস্ট আবেদনটি ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘আমরা ১৬৪ পাইনি। আর এ ধরনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে, ১৬৪ নিয়ে আমাকে জামিন আবেদন করতে হবে। চার্জশিট না হলে আমাকে ১৬৪ দেবে কেন পুলিশ। চার্জশিট হওয়ার আগে ১৬৪ দেওয়ার বিধান নেই।’

গত ২৬ জুন রিফাতকে বরগুনার রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে সময় স্বামীকে বাঁচাতে মিন্নির চেষ্টার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পর দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন; তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকে। পরে মিন্নির শ্বশুর তার ছেলেকে হত্যায় পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে ঘটনা নতুন দিকে মোড় নেয়।

গত ১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পর দিন আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষে মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হলে সেখানে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে পুলিশ জানায়। তবে বরগুনা সরকারি কলেজের স্নাতকের এই ছাত্রী পরে জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে।

মিন্নির বাবার অভিযোগ, ‘নির্যাতন করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মিন্নিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে পুলিশ’। এর পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের হাত আছে বলেও তার দাবি। বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত এবং জেলা ও দয়েরা জজ আদালতে মিন্নির জামিন আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর গত ৫ আগস্ট হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। পরে গত ৮ আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চে আংশিক শুনানির পর জামিন পাওয়ার আশা না দেখে মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না আবেদন ফিরিয়ে নেন।

সেদিন আইনজীবী জেড অইন খান পান্না ছাড়াও জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা, মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম ও জামিউল হক ফয়সাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোমতাজ উদ্দিন ফকির। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close