নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ আগস্ট, ২০১৯

ট্রেন চলেনি সময় মেনে

এবারের ট্রেনে আনন্দের ঈদযাত্রা দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। রেলের পশ্চিমাঞ্চলে ট্রেনের সময়সূচি ভেঙে পড়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমের জনপদের যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে হয়েছে কমলাপুর স্টেশনেই। কোনো কোনো ট্রেন ছাড়েছে নির্ধারিত সময়ের ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর। আর এই পুরোটা সময় যাত্রীদের বসে থাকতে হয়েছে প্ল্যাটফর্মে।

ঈদের ছুটি আজ রোববার শুরু হলেও তার আগে শুক্র ও শনিবার দুই ছুটির দিনেই বাড়ির পথ ধরেছেন বেশিরভাগ মানুষ। এর মধ্যে শুক্রবার ঢাকা থেকে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাশে লাইনচ্যুত হলে ট্রেন বন্ধ থাকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা।

রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, সুন্দরবনের ওই দুর্ঘটনাই সূচি বিপর্যয় ডেকে এনেছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে যেসব ট্রেন যায় তার সবগুলোই কম বেশি বিলম্বিত হয়েছে।

রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ঢাকা ছাড়ার কথা ছিল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায়। কিন্তু ছেড়েছে শনিবার সকাল ১০টায়। এই ট্রেনের যাত্রী রাকিবুল ইসলাম বলেন, সারা রাত স্টেশনে ছিলাম; তারপরও বাড়ি যেতে পারছি এটাই আনন্দ।

রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস শনিবার সকাল ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সূচি পিছিয়ে দুপুর আড়াইটায় নতুন সময় রেখেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস শনিবার সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল, নতুন সূচি অনুযায়ী তা দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা ছাড়ার কথা। তবে বেলা ১১টা পর্যন্ত ট্রেনটি ঢাকাতেই আসেনি। ঢাকায় আসার পর সেটি আবার যাত্রী তুলে খুলনার উদ্দেশে ছাড়ে।

চিলাহাটীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮টায় ছাড়ার কথা ছিল নতুন সূচি বিকাল সাড়ে ৪টায়। রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টায় ছাড়ার কথা ছিল; সেটি রাত সাড়ে ৯টায় ছাড়ে।

পঞ্চগড়ের ট্রেন একতা এক্সপ্রেসের সূচি সকাল ১০টা থেকে বদলে ১১টা ২৫ এ রেখেছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ট্রেনটি ছেড়েছে আরো আধা ঘণ্টা দেরিতে।

স্টেশন মাস্টার আমিনুল হক বলেন, ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ, সে কারণে প্রতিটি স্টেশনে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশিক্ষণ ট্রেন দাঁড়াচ্ছে। ফলে বিলম্ব হচ্ছে।

খুলনার যাত্রী মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, স্ত্রী-ছেলেমেয়ে নিয়ে সকাল ৬টায় স্টেশনে এসেছি। ৬টা ২০ মিনিটে সুন্দরবন ছাড়ার কথা ছিল। সেটা নাকি সাড়ে ১২টায় ছাড়বে। এতক্ষণ বসে থেকে বাচ্চারা ক্লান্ত। ট্রেন কখন আসবে জানি না। বিকল্প কোনো উপায় নেই। অপেক্ষা করতেই হবে।

অগ্রিম টিকিটে ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে বুধবার থেকে। প্রথম দিন থেকেই উত্তরের পথে কিছু ট্রেন দেরিতে চলেছে। গতকাল টাঙ্গাইলে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় ওই পথ ধরে চলা সব ট্রেনের সূচিই এলোমেলো হয়ে পড়ে।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে দিনে ৭৩টি আন্তঃনগর ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়। এর মধ্যে লালমনিরহাট স্পেশাল সর্বোচ্চ ৯ ঘণ্টা ২৫ মিনিট দেরি হয়। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ৭ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। বাকি সব ট্রেনই ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা করে দেরিতে ছাড়ে। ২৪টি ট্রেন ঢাকা থেকে সময়মতো ছেড়ে যায়। এর বেশ কয়েকটি পথে আটকা পড়ে কয়েক ঘণ্টা দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close