নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ আগস্ট, ২০১৯

ভরে উঠছে পশুর হাট, বেচাকেনা শুরু কাল

ঈদুল আজহার বাকি আর পাঁচ দিন। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু আনা শুরু হয়েছে ঢাকার বিভিন্ন পশুর হাটে। বেচাকেনা শুরু না হলেও গরু দেখতে আসছেন অনেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আজ বুধবার, কাল বা শুক্রবার থেকে হাটে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হবে। এই বেচাকেনা চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। ঈদুল আজহা উপলক্ষে সারা দেশে এ বছর ২ হাজার ৩৬২টি কোরবানি পশুর হাট বসানো হবে। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে বসছে ২৪টি।

যানজটের বিষয়টি মাথায় রেখে এবার রাজধানীর চারপাশে হাট বরাদ্দ দিয়েছে বলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গাবতলী পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, এখনো শামিয়ানা টাঙানো হচ্ছে, মাটি খুঁড়ে বাঁশ পোতার কাজ চলছে। তৈরি হচ্ছে গরু রাখার প্যান্ডেল। কোরবানির পশু যেন গরমে কষ্ট না পায়, ঝুলানো হচ্ছে সিলিং ফ্যান।

গাবতলী গরুর হাটে প্রায় সারা দেশ থেকেই গরু আসছে। কুষ্টিয়া থেকে এসেছে সবচেয়ে বেশি গরু। জেলার মিরপুর, খাজানগর, হুকসা, কুমারখালী, ঝাউদিয়া, হরলা, চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা ও রাহিণী থেকে গরু আসছে ট্রাক-ট্রলার ভরে। এছাড়াও হাটে গরু এসেছে ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, উল্লাপাড়া, টাঙ্গাইলের লালপুর, মাগুরার আজমপুর অঞ্চল থেকে।

কুষ্টিয়ার খাজানগর থেকে গাবতলীর হাটে গরু নিয়ে এসেছেন কালু ব্যাপারী। তিনি বলেন, হাটে গরু এনেছি ১৮টি। এখন তো আর ব্যাপারীদের হাতে ব্যবসা নেই। ব্যবসা চলে গেছে খামারিদের কাছে। যে খামারের মালিকের ১০ কোটি টাকা আছে, সে ব্যাংক থেকে লোন পায় ২০ কোটি। এ কারণেই তাদের হাতে ব্যবসা চলে গেছে। আমাদের সামর্থ্য কম বলেই তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছি না।

তিনি বলেন, তিন বছর ধরে গরুর ব্যবসায় লসে আছি। আগে গরু বিক্রি করে ভালো লাগতো। আগে একজন এসে পাঁচ থেকে সাতটা গরু কিনতো, এখন একটা গরু কিনতে আসে পাঁচ থেকে সাতজন মানুষ। ধারদেনা করে এবার ৬০ লাখ টাকার গরু এনেছি। আমার সব গরুই বড় বড়।

মেসার্স জাকারিয়া গাভীর খামারের মালিক মো. আনিসুর রহমান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আমরা গাবতলীর হাটে গরু বিক্রি করে আসছি। এবার আমাদের খামার থেকে দুই দিন মিলিয়ে ৬১টি গরু এনেছি। প্রায় আট থেকে নয় মাস আমাদের খামারের ছয়জন রাখাল দিয়ে গরুগুলো পালা হয়েছে। প্রতিটি গরুর খাবারে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। হাটে ৬১টি গরু দেখভালের জন্য রাখা আছে ২২ জন রাখাল।

তিনি বলেন, আমাদের গরুর পেছনে খরচ হয়েছে ১ কোটি থেকে সোয়া কোটি টাকা। আশা করছি, এবার দেড় থেকে দুই কোটি টাকায় গরু বিক্রি করতে পারব। ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের যেসব স্থানে পশুর হাট বসবে সেগুলো হলোÑ উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের হাট, খিলক্ষেত বনরূপা হাট, খিলক্ষেত ৩০০ ফুট সড়কসংলগ্ন উত্তর পাশে, ভাটারা (সাঈদনগর) পশুর হাট, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট খেলার মাঠ, মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়ক সংলগ্ন (বসিলা) পুলিশ লাইনসের খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন-৬ (ইস্টার্ন হাউজিং) খালি জায়গা, মিরপুর ডিওএইচএসের উত্তর পাশের সেতু প্রপার্টি ও উত্তর খান মৈনারটেক শহীদনগর হাউজিংয়ের খালি জায়গা।

অপরদিকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব স্থানে কোরবানির পশুর হাট বসবে এগুলো হলোÑ আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি যায়গা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ঝিগাতলা-হাজারীবাগ মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লালবাগ রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ হাট, কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়াম্যানবাড়ী মোড়, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট হাট, শ্যামপুর বালুর মাঠসহ আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের এলাকার খালি জায়গা, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সামসাবাদ মাঠসংলগ্ন আশপাশের এলাকার খালি জায়গা, কমলাপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, শনির আখড়া ও দনিয়া মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলা ইস্ট অ্যান্ড খেলার মাঠ, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউয়ারটেক মাঠসংলগ্ন আশপাশের এলাকার খালি জায়গা ও আফতাবনগর ইস্টার্ন হাউজিং মেরাদিয়া বাজার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close