বাকৃবি প্রতিনিধি

  ২৩ জুলাই, ২০১৯

‘দুধে সহনীয় অ্যান্টিবায়োটিক থাকলে ক্ষতি নেই’

দুধে স্বভাবতই কিছু ব্যাকটেরিয়া, অ্যান্টিবায়োটিক ও ভারী ধাতুর উপস্থিতি থাকতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিক কিংবা বিভিন্ন ধাতুর উপস্থিতির একটি নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। ফলে দুধে ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টিবায়োটিক সহনীয় মাত্রায় থাকলে কোনো ক্ষতি কিংবা স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। দুধে অ্যান্টিবায়োটিক ও ভারী ধাতুর উপস্থিতি থাকা স্বাভাবিক। দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য নিয়ে দেশে উদ্ভূত সংকটের নেপথ্যে থাকা মৌলিক বিষয় ও করণীয় সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু পালন অনুষদের ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের একদল গবেষক। দেশে উৎপাদিত তরল দুধের গুণগত মানের ওপর সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন, এতে ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি ও দুধের দাম পড়ে যাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক ও দুগ্ধশিল্পের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে জানান গবেষকরা।

গবেষকদের দাবি, দুধে স্বভাবতই কিছু ব্যাকটেরিয়া বা নানা কারণে ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক ও ভারী ধাতুর উপস্থিতি থাকতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক মানদ- ও সহনীয় মাত্রার বেশি না হলে তা মানবদেহের ক্ষতির কারণ হবে না। অর্থাৎ সহনীয় মাত্রায় ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক থাকলে তা ক্ষতিকর নয়।

গবেষকরা বলছেন, দুধের ক্ষেত্রে ভারী ধাতুর সহনীয় মাত্রা লেড .০১ পিপিএম, ক্যাডমিয়াম .০০৩ পিপিএম, মার্কারি .০০১ পিপিএম, আর্সেনিক .০১ পিপিএম। দুধ ও দুগ্ধজাতসহ যেকোনো খাদ্যদ্রব্যে নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক ও ভারী ধাতুর উপস্থিতি থাকলেই তা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলা যাবে। সহনীয় মাত্রার বেশি না হলে তা মানবদেহের ক্ষতির কারণ হবে না।

তারা বলেন, অঞ্চল ও পরিবেশভেদে এবং গবাদিপশুর খাদ্যাভ্যাসের ওপর দুধে কী পরিমাণ জীবাণুর উপস্থিতি থাকবে তা নির্ভর করে। দুধের এ বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে তুলনা করে গবেষণার ফল প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় জনমনে বিভ্রান্তি ও শঙ্কার সৃষ্টি হবে যা মধ্যম আয়ের দেশে দুগ্ধশিল্পের মতো ক্রমবিকাশমান একটি শিল্পের জন্য মোটেই সুখকর নয়। মানুষ ফল-সবজিতে ফরমালিনের উপস্থিতির মতো অযথা আতঙ্কিত হবে, পুষ্টিকর দুধ খাওয়া কমিয়ে দেবে এবং দুগ্ধশিল্প হুমকির মুখে পড়বে।

দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য নিয়ে দেশে উদ্ভূত সংকটের প্রেক্ষাপট নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন গবেষক দলের প্রধান বাকৃবির পশু পালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম।

গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close