নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ জুলাই, ২০১৯

প্রিয়া সাহার ব্যাপারে তড়িঘড়ি কিছু করা ঠিক নয়

কাদের

প্রিয়া সাহার বিষয়ে তড়িঘড়ি কিছু করা ঠিক হবে না বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের বক্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে বলা, এটা আমাদের দেশকে ছোট করা। এটা একটা কাল্পনিক বক্তব্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য। আমরা রয়ে সয়ে অগ্রসর হচ্ছি।

প্রিয়া সাহা দেশে না ফিরলে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কিনা তা সেতুমন্ত্রী কাদেরের কাছে জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি বলেন, উনি নিজেই বলেছেন, দেশে ফিরে আসবেন। আর এটা এমন একটা বিষয় নয় যে, জোর করে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে, এ রকম কিছু আমরা পাইনি। আমরা খতিয়ে দেখছি, সে রকম কিছু হলে পরে দেখা যাবে।

দলিত সম্প্রদায় নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘শারি’র পরিচালক প্রিয়া সাহা বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক। ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে ওয়াশিংটনে আয়োজিত এক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউসে যান তিনি। সেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

এদিকে ট্রাম্পের কাছে বিষয়টি তোলার ব্যাখ্যায় প্রিয়া সাহা বলেন, ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে অভিন্ন অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার যাতে ‘একসঙ্গে কাজ করতে পারে’Ñ সেজন্যই তিনি হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সহযোগিতা চেয়েছেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা তার উদ্দেশ্য ছিল না।

প্রিয়া বলেন, ‘এই কথাগুলো তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা। ২০০১ সালে যখন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্বাচনোত্তর চরম নির্যাতন চলছিল ৯৪ দিন ধরে, আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তখন বিরোধীদলীয় নেত্রী। তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার জন্য সারা পৃথিবীতে ঘুরেছেন। সব জায়গায় বক্তব্য দিয়েছেন।’

প্রিয়া সাহার এসব বক্তব্য দেওয়ার পেছনে ‘অন্য কারো হাত’ আছে কিনা সরকার তা খতিয়ে দেখছে জানিয়ে কাদের বলেন, তিনি যখন দেশে ফিরবেন তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে যে, তিনি কী উদ্দেশ্যে বলেছেন, কেন বলেছেন, কী ইনফরমেশনের ভিত্তিতে বলেছেন, সেটা তাকে অবশ্যই ব্যাখ্যা করতে হবে।

বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়ার ওই বক্তব্যে সারা দেশে ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ মাইনরিটি মানুষÑ এ ধরনের উদ্ভট-কাল্পনিক বক্তব্য উনি কেন দিলেন, কেমন করে দিলেন? আর শেখ হাসিনা মাইনরিটি নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন সে বক্তব্যের সঙ্গে সংখ্যাতত্ত্বের ওই বিষয়টারতো কোনো মিল নেই।

প্রিয়া সাহার স্বামী যে দুদকের একজন কর্মকর্তা- সে বিষয়ে একজন সাংবাদিক সেতুমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

কাদের তখন বলেন, উনার স্বামী সরকারি চাকরি করেন। এক পরিবারে স্বামী-স্ত্রী-ছেলেমেয়ে সবাই এক মতাবলম্বী হবেনÑ এমন তো কোনো কথা নেই। উনার স্ত্রী অন্যায় করলেন, সেটার জন্য স্বামীকে কেন অভিযুক্ত করতে হবে?

প্রিয়া সাহার বক্তব্যের পেছনে কাদের প্ররোচনা থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেনÑ এমন প্রশ্নও রাখা হয়েছিল ওবায়দুল কাদেরের সামনে। জবাবে তিনি বলেন, ‘শেখানো কথা কিনা- সেটা আমাদের জানা নেই। বিষয়টা খতিয়ে দেখছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close