নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ জুলাই, ২০১৯

ভয়ংকর মিথ্যা বিশ্বাস করার মতো বোকা ট্রাম্প নন

সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার সরকার অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার নীতিতে বিশ্বাসী নন। তারা প্রিয়া সাহার ভয়ংকর মিথ্যা দাবি বিশ্বাস করার মতো বোকাও নন।

গতকাল রোববার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে সজীব ওয়াজেদ জয় এসব কথা বলেন। দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার করা অভিযোগ প্রসঙ্গে জয় এ স্ট্যাটাস দেন।

প্রিয়া সাহা বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক। গত বুধবার ওয়াশিংটনের ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহা অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান উধাও হয়ে গেছেন। তিনি এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাহায্য চান। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রিয়া সাহার অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যা ও কাল্পনিক বলেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

জয় তার স্ট্যাটাসে লেখেন, “গত নির্বাচনের পর আমি একটু বিরতি নিই, তাই এই পেজেও কম পোস্ট করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমার কিছু বলা উচিত বলে মনে হলো। আপনারা হয়তো দেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার ভয়ংকর ও মিথ্যা দাবি। উনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে নাকি ৩ কোটি ৭০ লাখ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ‘গায়েব’ বা ‘গুম’ হয়ে গেছেন। প্রায় ৪ কোটির কাছাকাছি যে সংখ্যাটি উনি বলছেন, তা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যার ১০ গুণেরও বেশি আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের সংখ্যার কাছাকাছি। এত মানুষ গুম হলো সবার অজান্তে? ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ গায়েব হলো কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই?”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে জয় লিখেছেন, ‘প্রিয়া সাহাকে আমেরিকায় পাঠানো হয় বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের মনোনয়নে। অনেক সমালোচনার পর আজ তারা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তারা বলেছেন, তারা অংশগ্রহণকারীদের কথাবার্তার ওপর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেন না। কিন্তু যখন তাদের একজন মনোনীত অংশগ্রহণকারী তাদেরই রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে কেন ভয়ংকর মিথ্যা বক্তব্য দিলেন, তাদের উচিত ছিল তাৎক্ষণিকভাবে তার প্রতিবাদ জানানো, যা তারা করেননি।’

জয় তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এই বিষয়টি থেকে কিন্তু মার্কিন দূতাবাসেরই দুরভিসন্ধি প্রকাশ পায়। তারা জেনেশুনেই প্রিয়া সাহাকে বাছাই করে, কারণ তারা জানত উনি এই ধরনের ভয়ংকর মিথ্যা মন্তব্য করবেন। এই ধরনের কাজের পিছে একটাই কারণ চিন্তা করা যায়, মানবিকতার দোহাই দিয়ে আমাদের এই অঞ্চলে সেনা অভিযানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। মনে রাখা ভালো, কয়েক দিন আগেই মার্কিন এক কংগ্রেসম্যান একটি বক্তব্যে বলেছিলেন বাংলাদেশের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য দখল করা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, মার্কিন দূতাবাস যে আওয়ামী লীগ বিরোধী তা নতুন কিছু নয়। তাদের সব অনুষ্ঠানেই জামায়াতের নেতাকর্মীরা ও যুদ্ধাপরাধীরা নিয়মিত আমন্ত্রিত হতেন। প্রিয়া সাহার মিথ্যা বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে তাদের সরাসরি আধিপত্য বিস্তারের ষড়যন্ত্র পরিষ্কারভাবেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সৌভাগ্যবশত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার সরকার অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার নীতিতে বিশ্বাসী নন। তারা এ ধরনের ভয়ংকর মিথ্যা দাবি বিশ্বাস করার মতো বোকাও নন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close