বরগুনা প্রতিনিধি

  ১৮ জুলাই, ২০১৯

পাঁচ দিনের রিমান্ডে মিন্নি

শ্বশুর খুশি, বাবা বললেন ‘ষড়যন্ত্র’

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার বরগুনার বিচারিক হাকিম সিরাজুল ইসলাম গাজী এ আদেশ দেন। তবে মিন্নির গ্রেফতার ও রিমান্ডকে কেন্দ্র করে পরস্পরবিরোধী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তার বাবা ও শ্বশুর। মিন্নির গ্রেফতারে তার শ্বশুর আবদুল হালিম খুশি হলেও এটাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলছেন বাবা মোজাম্মেল হোসেন।

মিন্নির বাবা অভিযোগ করেন, মিন্নিকে গ্রেফতারের বিষয়টি ষড়যন্ত্র। মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা এবং এই খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আড়াল করার জন্যই এগুলো সাজানো হচ্ছে। তিনি সঠিক তদন্ত করে যারা প্রকৃত দোষী তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তার মেয়ে ও পরিবার ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন তিনি। মিন্নির বাবা বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ এসে আসামি শনাক্ত করার জন্য মিন্নিকে পুলিশ লাইনসে নিয়ে যায়। আমি সঙ্গে যাই। এরপর আমাকে নাশতা খেতে দিয়ে বাইরে বসিয়ে রেখে মেয়েকে পুলিশ লাইনসের ভেতরে নিয়ে যায় পুলিশ। আমি রাত ১০টা পর্যন্ত মেয়ের জন্য বাইরে অপেক্ষা করি। এরপর আমাকে জানানো হয় মিন্নিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কী জন্য আমার মেয়েকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেসব বিষয়ে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।

অপরদিকে রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বলেছেন, ‘মিন্নিকে গ্রেফতার করায় আমি খুশি। কারণ আমি এর আগে সংবাদ সম্মেলনে করে এটার দাবি করেছিলাম। আর মিন্নিকে গ্রেফতার করা হয়েছে সম্পূর্ণ তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত হয়েই এটা করেছে। এটা প্রশাসনের ব্যাপার।’

মঙ্গলবার মিন্নিকে প্রায় ১৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ ওই মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনে তাকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে গ্রেফতারের ঘোষণা দেয়। বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন।

৫ দিনের রিমান্ডে মিন্নি : গতকাল বুধবার দুপুরে মিন্নিকে কড়া পুলিশি প্রহরায় আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির মিন্নিকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্র জানায়, বুধবার বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে পুলিশ মিন্নিকে বরগুনার বিচারিক হাকিম সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে। আদালতের বাইরে মিন্নির বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত থাকলেও কারো সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। আদালতের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর বিকাল পৌনে ৪টার দিকে মিন্নিকে আদালত থেকে বের করে কড়া প্রহরায় পুলিশ লাইনসে নেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকা-ের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরো চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close