ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৬ জুন, ২০১৯

ভারত ম্যাচটাই সবকিছু

তামিম ইকবালের চোখ মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে। লর্ডসে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া লড়াই তখন কেবল শুরু হয়েছে। বাংলোদেশ ওপেনার স্কোর দেখতে দেখতে বলছিলেন, ‘৩৫০ করতে হবে, আজকে (কালকে) আমি অস্ট্রেলিয়ার সাপোর্টার।’ পাশেই দাঁড়ানো মাশরাফি বিন মর্তুজা সংগত করলেন, ‘আমি তো ছোট থেকেই অস্ট্রেলিয়ার সাপোর্টার!’ রসিকতায় হাসির রেশ থাকতে থাকতেই অধিনায়ক আবার সিরিয়াস, ‘আগে নিজেদের কাজ ঠিকঠাক করতে হবে। আপাতত ভারত ম্যাচটাই আমাদের ফাইনাল, আমাদের সবকিছু।’ আফগানিস্তানকে হারানোর পর সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাব্য ছক কষছে বাংলাদেশ। কাল সকালে সাউদাম্পটনের গ্র্যান্ড হার্বার হোটেলের সামনে তামিম-মাশরাফির কথায়-আড্ডায় সেটিই ফুটে উঠছিল বারবার। ইংল্যান্ড সব ম্যাচ হারলে বাংলাদেশের সুবিধা, নিউজিল্যান্ড হারলে নাকি জিতলে ভালোÑ এসব হিসাব চলছিল।

তামিম মনে করিয়ে দিলেন, শ্রীলঙ্কাকেও হিসেবের বাইরে রাখা যাবে না। বিশ্বাস নেই পাকিস্তানকে দিয়েও। যখন-তখন চমকে দিতে পারে। তবে শেষমেশ আলোচনার চূড়ান্ত ধাপ গিয়ে ঠেকে একই বিন্দুতে। আগে নিজেদের কাজটা করতে হবে। প্রথমে ভারত, তারপর পাকিস্তান। বিশ্বকাপে প্রতিটি ম্যাচই এখন নিজেদের শেষ ম্যাচ হিসেবে দেখছে টাইগাররা। জিততে হবে প্রতিটিই। আফগানিস্তান বাধা পেরোনোর পর সামনে এখন ভারত। পরশুর জয়টা যতটা প্রত্যাশিত ছিল, টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট ভারতকে হারানো হবে ততটাই কঠিন। তবে সহজ-কঠিন ভাবার বিলাসিতা এখন নেই দলের। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে ভারতের কাছে যেখানে হেরেছিল বাংলাদেশ, সেই বার্মিংহামেই ম্যাচ। এবার ম্যাচ প্রাথমিক পর্বের, তবে টাইটানিকের শহর সাউদাম্পটন থেকে বার্মিংহামে যাওয়ার বাসে ওঠার আগে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে মাশরাফি বলেন, ‘আমরা ভারত ম্যাচটিকে দেখছি নক আউট হিসেবেই। সেমিফাইনালে যেতে হলে জিততেই হবে। আমাদের কাছে এই ম্যাচ তাই সেমিফাইনাল, ফাইনাল বা সবকিছু বলতে পারেন। ডু অর ডাই। শক্তিতে আমরা কতটা পিছিয়ে, ওরা কতটা ফেভারিট, এসব ভাবার সুযোগ নেই। টিকতে হলে জিততে হবে, জেতার পথ বের করতে হবে।’ সেই পথ বের করায় গুরুদায়িত্ব যার, দলের কম্পিউটার অ্যানালিস্ট, ভারতেরই শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন জানালেন, ‘পথ অবশ্যই মিলবে। ভারতকে হারানো অসম্ভব নয়, অবশ্যই পথ আছে। যদিও বার্মিংহামে ওদেরকে হারানো সহজ হবে না। তবে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন যদি আমরা ঠিকঠাক করতে পারি, সবাই সেরাটা দিতে পারে, অবশ্যই সম্ভব।’

সীমিত সামর্থ্য নিয়েও খেলোয়াড়ি জীবনে ভয়ডরহীন মানসিকতার জন্য পরিচিত ছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। এখন তিনি বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার। তার কণ্ঠে সেই পরিচিত মানসিকতারই প্রতিফলন, ‘ভয় পেয়ে লাভ আছে? খেলতে হবে, জিততে হবে। হিসাব সোজা। মাঠে নেমে আমরা সমানে সমান লড়াই করব। তারপর যা হয় হোক।’

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ও যথেষ্ট নাও হতে পারে সেমিফাইনালে উঠতে। প্রয়োজন হতে পারে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ও। সৌম্য সরকারের ভাবনা, শেষ চার না ভেবে একটি করে ম্যাচ জিতে সামনে এগিয়ে চলা, ‘সেমিফাইনালে খেলতেই হবে ধরে নিলে কাজটা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। আমরা একটি করে ম্যাচ ধরে এগোচ্ছি। পরের ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে, চাওয়া থাকবে ভালো খেলে ম্যাচটা জেতার। এরপর তাকাব পরের ম্যাচে। সেমিতে খেলতে পারব নাকি পারব না, সেটি পরে। আমাদের পরের ম্যাচটি জিততে হবে। তারপর দেখব সুযোগ আছে কিনা।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close