নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ জুন, ২০১৯

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল হারানো স্বাধীনতা ফেরাতে

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাঙালি বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে; যে মর্যাদা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর বাঙালি হারিয়ে ছিল। আর বাংলার হারানো স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই জন্ম হয়েছিল আওয়ামী লীগের।

যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে, বাংলার জনগণ কিছু না কিছু পেয়েছে। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। এ সময় ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এই ঐতিহাসিক দিনে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার

বাংলা প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের আজকের অঙ্গীকার।

এদিকে কর্মক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে না ?ভুগে আত্মবিশ্বাসী হতে প্রশাসনের নতুন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো খুঁজে বের করে সেসব সমাধানের নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমিতে ১১০, ১১১ এবং ১১২তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে সব থেকে বড় কথা আত্মবিশ্বাস। কোনো একটা কাজ করতে গেলে কীভাবে করব, কীভাবে হবে, কীভাবে টাকা আসবে, কোত্থেকে টাকা আসবেÑ এত দুশ্চিন্তা না করে মনে রাখতে হবে, এ কাজটা করতে হবে। কীভাবে করতে হবে, সেটা নিজেই খুঁজে বের করতে হবে। নিজের ভেতর ইনোভেটিভ চিন্তা থাকতে হবে। দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগলে চলবে না। মনে করতে হবে, অবশ্যই পারব। আমি এটুকুই অনুরোধ করব, যেখানে যাবেন শুধু চাকরির জন্য চাকরি না। জনসেবা করা, দেশসেবা করা, দেশকে ভালোবাসা, দেশের মানুষকে ভালোবাসাÑ এ কথাগুলো মনে রাখতে হবে।’ জনপ্রশাসনের উন্নয়নে নেওয়া সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ এম আশিকুর রহমান, জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদ, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর কাজী রওশন আক্তার প্রমুখ।

আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, চার জাতীয় নেতা এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মাহুতি দানকারী দলের নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পরে প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে অপর একটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমদ এবং অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ড. আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান এবং পিযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এস এস রেজাউল করিম, রেলওয়েমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আহমেদ হোসেন ও অ্যাডভোকেট মেজবাহউদ্দিন সিরাজ এবং দলের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের পাশাপাশি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগ নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালের এই দিনে আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৫৩ সালে নাম হয় নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনের পর এই রাজনৈতিক দলের নাম রাখা হয় বাংলাদেশ আওয়ামী। এরপর দলীয় প্রধান আবদুল মালেক উকিলের নেতৃত্বে সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রাম, আরো পরে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এরশাদবিরোধী আট বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলন, একাত্তরের ঘাতক-দালালবিরোধী লড়াই এবং মৌলবাদ ও জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনের মধ্য দিয়ে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে পরিণত হয় এই সংগঠনটি। আওয়ামী লীগের এই যে নবজাগরণ এর মূল নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close