নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৭ মে, ২০১৯

জয়িতা ফাউন্ডেশনের সভায় প্রধানমন্ত্রী

মেয়েদের যেন সংসারে মর্যাদা দেওয়া হয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সমাজে নারী-পুরুষের সুষম উন্নয়ন না হলে অগ্রগতি হবে না। মেয়েরা যাতে আত্মসম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকতে পারে, স্বাবলম্বী হতে পারে এবং সংসারে যেন তাকে মর্যাদা দেওয়া হয়। গতকাল রোববার সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে জয়িতা ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নসের বিশেষ সভার সূচনা ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা নারীর কল্যাণে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, বিভিন্ন ধনের বৃত্তি এবং উপবৃত্তি প্রদানসহ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। মেয়েদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ করে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, না হলে তারা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়বে। প্রধানমন্ত্রী জয়িতা ফাউন্ডেশনকে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তার সরকার নারী-পুরুষের সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি বহুমুখী ব্যবসা উদ্যোগের জন্য নারীদের সমান ও দক্ষ করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। এ সংগঠনটিকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে সেখানে কর্মরত সব নারীই বলে উঠতে পারেন আমিই জয়িতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এর আওতায় কর্মরত তৃণমূল পর্যায়ে যে উদ্যোক্তা রয়েছেন তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।

নারীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অবদান স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীরাঙ্গনাদের সামাজিক মর্যাদা দিয়ে তাদের পুনর্বাসন করেন জাতির পিতা।

তিনি আরো বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতিতে নারীর সম্পৃক্ততা জোরদারের পাশাপাশি পরিবারে নারীর অবস্থান সুদৃঢ় করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। জয়িতা। শুধু নিছক একটি শব্দই নয়, এ যেন নারীর ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। নারীর সফলতার গল্প। উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের মূর্ত প্রতীক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো আমরা দেশের জন্য কাজ করব, মানুষের জন্য কাজ করব। আর মানুষকে দিতে গিয়ে আমি এটাই মনে করেছি যে, আমরা সমাজকে কিছু দিতে গেলে নারী-পুরুষ উভয়কেই কিছু দিতে হবে। একদিক ঠিক করলে সেটা পঙ্গুই থাকবে, কখনো উন্নতি হতে পারে না।’

অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সহায়তায় সরকারের নানা কর্মসূচিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, সঠিক পরিকল্পনায় পিছিয়ে পড়াদেরও দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। তিনি আরো বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতা, মায়েদের ভাতা এগুলো এ কারণেই করেছি যে, একটা নারী যখন একা হয়ে যায়, তখন তার সন্তানের দায়িত্ব তার ওপরই বর্তায়। অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা দূর হবে বলে প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি আরো বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতিতে নারীর সম্পৃক্ততা জোরদারের পাশাপাশি পরিবারে নারীর অবস্থান সুদৃঢ় করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। প্রসঙ্গত, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে পুরুষের পাশাপাশি সমান গুরুত্বপূর্ণ নারীর ভূমিকাও। এই বাস্তবতায় ২০১১ সালের নভেম্বরে সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধায়নে মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের মাধ্যমে যাত্রা করে জয়িতা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের নারী উদ্যোক্তাদের একই প্লাটফরমে তুলে আনছে সংগঠনটি। ব্যবসা পরিচালনা ও পণ্য উৎপাদনে প্রয়োজনীয় জ্ঞান-দক্ষতা বিনিময়ের পাশাপাশি ক্ষেত্রবিশেষ পুঁজিরও জোগান দিয়ে নারীকে গড়ে তুলছে স্বাবলম্বী হিসেবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close