পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা থেকে

  ২১ মে, ২০১৯

হাল ছাড়েননি মোদিবিরোধীরা ইভিএমে কারচুপির আশঙ্কা

বুথফেরত সমীক্ষা যেখানে ভারতের বিরোধীদের কার্যত অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে, সেখানে বিরোধীরা কেউই এখনো হাল ছাড়তে নারাজ। সে কারণেই কলকাতায় এসে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তেলেগু দেশম পার্টির নেতা চন্দ্রবাবু নায়ডু। এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের সুরক্ষার দাবিতে দেশের প্রায় সব বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করবেন। তাদের আশঙ্কা, স্ট্রং রুমে থাকা অবস্থায় কারচুপি করা হতে পারে ইভিএমে। গতকাল সোমবার দমদম বিমানবন্দরে নামার পর সোজা কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে চলে যান অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তাদের মধ্যে ৪৫ মিনিট বৈঠক হয়। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম।

গত রোববার লোকসভা নির্বাচনে সপ্তম দফা ভোটগ্রহণের পর বুথফেরত সমীক্ষার ফলে বলা হয়েছে, ৮০ আসনের উত্তর প্রদেশে সপা-বসপা জোট ২০ থেকে ৪০টি আসন পাবে। এদিকে বুথফেরত সমীক্ষার ফলে আরো একবার আশাহত হতে হয়েছে কংগ্রেসকে। গত সোমবার দিল্লিতে ভেস্তে গেছে সোনিয়া গান্ধী-মায়াবতীর বহু প্রতীক্ষিত বৈঠক। বহুজন সমাজ পার্টির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দিল্লি যাচ্ছেন না পার্টির নেতা মায়াবতী। ইউপিএ চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করার কোনো কর্মসূচিই নেই মায়াবতীর। সোনিয়া গান্ধী ছাড়াও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও দেখা করার কথা ছিল মায়াবতীর এবং এই বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক আঙিনায় তুমুল উৎসাহ ছিল। তবে শেষমেশ তা ভেস্তে যাওয়ায় অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠছে, মহাজোটের ভবিষ্যৎ টালমাটাল নয়তো?

এদিকে, লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে সরকার যাতে গড়তে না পারে, সে নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এবং সেসব আঞ্চলিক দলের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে কয়েক দিন ধরেই মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল চন্দ্রবাবু নায়ডুকে। দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি থেকে শুরু করে এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারসহ একাধিক নেতানেত্রীর সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে চন্দ্রবাবুর। লক্ষেèৗতে গিয়েও অখিলেশ যাদব ও মায়াবতীর সঙ্গে দেখা করেছেন চন্দ্রবাবু। এরপরই শোনা যাচ্ছিল, মায়াবতীর সঙ্গে সোনিয়া গান্ধীর বৈঠক হতে পারে। চন্দ্রবাবু ছাড়াও সোনিয়া গান্ধী ব্যক্তিগত স্তরে উদ্যোগী হয়ে ইউপিএ শরিকদের সঙ্গে কথা বলতে নির্দেশ দেন দলীয় নেতাদের। কারণ বুথফেরত সমীক্ষায় যতই নিরাশা জুটুক না কেন, সহজে হাল ছাড়তে নারাজ ইউপিএ তথা মহাজোটের কান্ডারিরা। ২৩ মে নির্বাচনের ফলাফলে বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের হাত বাড়াতে হবে কে চন্দ্রশেখর রাও, জগন্মোহন অথবা নবীন পট্টনায়কদের দিকে। সে চেষ্টায় আগেই জল ঢেলে দিতে চায় কংগ্রেস তথা মহাজোট।

ওদিকে লোকসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পরদিনই মধ্য প্রদেশের সরকার গড়ার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে জানিয়ে মধ্য প্রদেশের রাজ্যপালকে চিঠি লিখে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। মধ্য প্রদেশের বিজেপি নেতা গোপাল ভার্গব বলেছেন, অনেকগুলো বিষয় নিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি লেখা হয়েছে। মধ্য প্রদেশ সরকার, যেগুলোর সমাধান করতে পারছে না। মধ্য প্রদেশে কংগ্রেস সরকার গড়লেও কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির প্রাপ্ত আসনের ফারাক খুব বেশি ছিল না। এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতাও পায়নি কংগ্রেস। ২৩০ আসনের মধ্যে ১১৪টি পেয়েছিল আর বিজেপি পেয়েছিল ১০৯টি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close