নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ মে, ২০১৯

জামিনে থাকা জঙ্গিদের নজরে রাখছে পুলিশ

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যে কোনো দেশেই, কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। এমন টার্গেট আমাদের দেশেও থাকতে পারে। তবে দেশের জঙ্গিদের সক্ষমতা নেই। তারা চাইলেও কোনো ঘটনা ঘটাতে পারবে না। তবুও কোনো ধরনের ঝুঁকি না নিয়ে, জামিনে থাকা জঙ্গিদের ওপর কড়া নজর রাখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি যেসব জঙ্গি লাপাত্তা, তাদের খুঁঁজে বের করা হচ্ছে। সম্প্রতি আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে সিরিয়ায় যাওয়া এক জঙ্গিকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। গ্রেফতারের পর বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে ৩৩ বছরের মুতাজ আবদুল মজিদ কফিল। এই তথ্যের ভিত্তিতেই এমন সতর্কতা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

সতর্কতার অংশ হিসেবে জামিনে বেরিয়ে লাপাত্তা হওয়া জঙ্গিদের অবস্থান শনাক্ত করতে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে র?্যাব-পুলিশের সদস্যরা।

র?্যাব ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলার পর জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এ সময় তাদের হাতে গ্রেফতার হয় ১ হাজারেরও বেশি বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। এই সদস্যদের মধ্যে এখন প্রায় ৪ শতাধিক জঙ্গি সদস্য জামিনে রয়েছে। জামিনে থাকা এমন অনেক জঙ্গির অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে।

এদিকে এসব ঘটনায় পুলিশ সদও দফতর থেকে বলা হচ্ছে, জামিনে বের হওয়া জঙ্গিদের চিহ্নিত করে, নজরদারির আওতায় আনতে হবে। সম্প্রতি ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের এ সম্পর্কিত বিশেষ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট ও এলিট ফোর্স র?্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গিবাদ থেকে বর্তমান কোনো দেশই পুরোপুরিভাবে নিরাপদ নয়।

র?্যাব সদর দফতরের তথ্য বলছে, ২০১৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত র?্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ৫৮৪ জন জঙ্গি। এদের মধ্যে ১৬৭ জন জামিনে রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ রয়েছে ১৫৯ জন, নারী আটজন।

অন্যদিকে সম্প্রতি আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে সিরিয়ায় যাওয়া এক জঙ্গিকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করেছে সিটিটিসি। গ্রেফতারের পর বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে ৩৩ বছরের মুতাজ আবদুল মজিদ কফিল।

পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্রে জানা যায়, মুতাজ তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসের পক্ষে প্রায় পাঁচ মাস যুদ্ধ করেছে। তারপর সে সেখান থেকে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় আসে। ঢাকায় নব্য জেএমবির কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

পুলিশ বলছে, মুতাজের বাবা বাংলাদেশি, মা পাকিস্তানি, সৌদি আরবে জন্ম ও বেড়ে উঠা। দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ পাসপোর্ট বানায় মুতাজ। আরবি আর ইংরেজিতে দক্ষ থাকলেও বাংলা ভাষা জানেন না তিনি।

মুতাজের বাংলাদেশে আসা ও উগ্রপন্থিদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার তথ্য কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে জঙ্গি দমনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। আর এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই, যে কোনো পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সার্বিক নিরাপত্তা ঢেলে সাজানো ও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যদিও তারা বলছেন, সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যে কোনো দেশেই, কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। এমন টার্গেট আমাদের দেশেও থাকতে পারে। তবে দেশের জঙ্গিদের সক্ষমতা নেই। তারা চাইলেও কোনো ঘটনা ঘটাতে পারবে না।

একই বিষয়ে র?্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, সারা বছর এই জঙ্গিদের কোনো না কোনো গ্রুপ সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তাদের অনেকেই আবার ধরা পড়ে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close