মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে নুসরাতের হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জন অভিযুক্ত দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, পুলিশ হেড কোয়ার্টারের তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন ধরে অভিযুক্ত সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসার ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা রাফির শরীরে আগুন দেয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রাফি মারা যায়।

ওই ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি খতিয়ে দেখতে ১৩ এপ্রিল ডিআইজি এস এম রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ২ মে প্রতিবেদন পুলিশ সদর দফতরে জমা দেয়। ফেনীর এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার এবং সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, এসআই ইকবাল ও এসআই ইউসুফের গাফিলতির কথা উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।

দায় স্বীকার করে ১২ জনের জবানবন্দি : নুসরাত হত্যাকান্ডে এখন পর্যন্ত ১২ জন আসামি আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট শরিফ উদ্দিন আহমেদ ও জাকির হোসাইনের আদালতে আসামিদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

জবানবন্দি দেওয়া আসামিরা হলেন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, তার সহযোগী নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের, জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল। এরা প্রত্যকেই নুসরাত হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।

"