মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২৩ এপ্রিল, ২০১৯

প্রতিদিনের সংবাদে খবর প্রকাশ

অবশেষে শিকলমুক্ত হলেন রামকৃষ্ণ সাহা

৩০ বছর পর শিকলবন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছেন মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার রামগোপালপুর এলাকার রামকৃষ্ণ সাহা (৫৫)। গত শনিবার জেলা পুলিশ অন্ধকার ঝুপড়ি ঘর থেকে শিকলের তালা ভেঙে তাকে মুক্ত করে। গত বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের সংবাদে ‘সম্পত্তির লোভ : ৩০ বছর ধরে শিকলবন্দি রামকৃষ্ণ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি জেলা পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসলে গত শনিবার মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশে হাতিমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা রামকৃষ্ণ শাহাকে (৫৫) শিকলমুক্ত করেন। একইসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রামকৃষ্ণর ভাবি মনি রানী শাহা থানায় নেওয়া হয়।

হাতিমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রামকৃষ্ণ শাহা শিকলমুক্ত করা হয়। এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এটি আসলে খুবই দুঃখজনক যে ৩০ বছর ধরে একটি মানুষকে শিকলে বন্দি রাখা হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিষয়টি আমার নজরে আসলে হাতিমারা পুলিশ ফাঁড়িকে নির্দেশ দেওয়া হয়। উদ্ধারের পর আমি খবর নিয়েছি সে বর্তমানে পুলিশ ফাঁড়ির হেফাজতে আছে। তার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করে পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে উদ্ধারের পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রামকৃষ্ণ শাহাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম ফেরদৌস রামা সাহাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। চিকিৎসক সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন বন্দি জীবন-যাপন করায় রামা সাহা কিছুটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং ওষুধ লিখে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, মিরকাদিমের দুধপট্টি এলাকার মৃত গৌরাঙ্গ শাহার ছেলে রামকৃষ্ণ শাহাকে তার আপন ছোট ভাই গনাই শাহা ৩০ বছর আগে ঘরের মধ্যে শিকলবন্দি করে রাখে। পাঁচ বছর আগে গনাই শাহা মারা যায়। গনাই শাহার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মনি রানী শাহা ও তার সন্তানরা এখন রামকে একটা ছোট অন্ধকার ঝুপড়ি ঘরে শিকলবন্দি করে রেখেছিল।

এদিকে গনাই শাহার স্ত্রী মনিরানী শাহা দাবি করেন, বরিশাল ব্যবসা করতে গিয়ে ব্যাপক মারধর করে স্বীকার হয় রামকৃষ্ণ। সেই থেকে তিনি মানসিকভাবে পাগল হয়ে যায়। এজন্য তাকে এভাবে শিকলে আটকে রাখা হয়েছিল।

রামকৃষ্ণ সাহার স্বজনদের দাবি, বরিশালে ব্যবসা করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়ে রামকৃষ্ণ সাহা মানসিক ভারসাম্য হারায়। ছেড়ে দিলে অত্যাচার ও উৎপাত করে। এই জন্য তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। তবে স্থানীয়রা জানায়, মিরকাদিমের দুধপট্টি এলাকার স্বর্গীয় গৌরাঙ্গ সাহার ছেলে রামকৃষ্ণ সাহা ওরফে রামকে তার আপন ছোট ভাই গনাই সাহা ৩০ বছর আগে ঘরের মধ্যে শিকলবন্দি করে রাখে। পাঁচ বছর আগে গনাই সাহা মারা যায়। তবুও শিকল মুক্ত হতে পারেনি রামকৃষ্ণ ওরফে রাম সাহা। গনাই সাহার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মনি রানী সাহা ও তার সন্তানরা এতদিন রামকৃষ্ণকে একটা ছোট অন্ধকার ঝুপড়ি ঘরে শিকলবন্দি করে রেখেছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close