গাজী শাহনেওয়াজ

  ১৬ এপ্রিল, ২০১৯

আরো সহজে মিলবে জাতীয় পরিচয়পত্র

নাগরিকদের প্রত্যাশিত জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া আরো সহজতর হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) নাগরিকদের হয়রানি ও ভোগান্তির বিড়ম্বনা লাঘবে ভোটার হওয়া এবং পরিচয়পত্র পাওয়া সহজ করার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে ভোটার হওয়ার পর কিংবা পরিচয়পত্রের হারানো কার্ড উত্তোলনে সুন্দরবনের কোলঘেঁষা সুদূর শ্যামনগরের কৈখালী ইউনিয়নের মেন্দিনগর গ্রাম থেকে রাজধানী শহর ঢাকায় আসতে হবে না। এখন জেলা শহর থেকেই পাওয়া যাবে জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি। ভবিষ্যতে এ কাজটিকে উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা রয়েছে সাংবিধানিক সংস্থার অধীন এই উইংয়ের। গতকাল সোমবার জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি) থেকে জারি করা এক পত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ইসির মাঠপর্যায়ের অফিসে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের সেবা ভোটারদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র পুনর্মুদ্রণ-সংক্রান্ত কার্যক্রম পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলাসহ বৃহত্তর জেলাসমূহে বিকেন্দ্রীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। এ লক্ষ্যে সংযোগ স্থাপনসহ (কানেকটিভিটি) প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলায়ই সংযোগ প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিটি জেলায় দুটি করে প্রিন্টার, লেমিনেটিং মেশিন ও অন্যান্য সরঞ্জাম ক্রয় সম্পন্ন হয়েছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, আগামী ২০ এপ্রিল থেকে সব জেলা নির্বাচন অফিস থেকে হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র পুনর্মুদ্রণ ও বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা যাবে। এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা ও জটিলতা সামনে এলে সিনিয়র মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার ও সিস্টেম এনালিস্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করে হারানো পরিচয়পত্র মুদ্রণ ও বিতরণের জটিলতা কাটিয়ে নাগরিকদের সেবা দিতে পারবেন।

ইসির যুগ্মসচিব ও এনআইডির পরিচালক (অপারেশন) মো. আবদুল বাতেন বলেন, ভোটার জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ বাণিজ্যিক নয়, এটি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে কীভাবে এনআইডির সেবাটি সাধারণ ভোটারদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া যায়। বর্তমান কমিশন, কমিশন সচিব এবং উইংয়ের ডিজির স্বচ্ছ চিন্তার প্রতিফলন হচ্ছে হারানো কার্ডটি নিজ নিজ জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রিন্ট করার এই মহা-উদ্যোগ। এ সেবাটি শিগগিরই শুরু হবে, সে লক্ষ্যে আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গতকাল মাঠপর্যায়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভোটার হওয়া ও ভোটার না হওয়া নাগরিকদের সেবা সহজতর করতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সিষ্টেম চালু করছে ইসি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ জানুয়ারি মাসিক সমন্বয় সভায় হারানো পরিচয়পত্র মুদ্রণের কাজটি জেলা পর্যায়ে নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। মাঝে দুই মাস সময় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম অফিসগুলোতে স্থাপন করা হয়। আর গতকাল প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো পত্রে কার্যক্রম শুরু করতে নির্দেশনা পাঠানো হয়।

এদিকে, ইসির নতুন আরেকটি সিদ্ধান্ত আসছে ভোটার হওয়ার পর জাতীয় পরিচয়পত্রটি নিজ নিজ জেলা থেকে মুদ্রণের। বর্তমান হারানো কার্ডটির সঙ্গে সারা বছর যারা উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ভোটার হন, অচিরেই এসব নাগরিকরা জেলা অফিস থেকে আইডি কার্ডটি পাবেন। কারণ হারানো কার্ডটির সঙ্গে নতুন ভোটারের কার্ডটি একত্রে মুদ্রণ হবে। তবে, বছরের নির্ধারিত সময়ে যে ভোটার হালনাগাদ হয়, এ সময়ে ভোটার হওয়া নাগরিকদের কার্ডটি একত্রে ঢাকার অফিস থেকে মুদ্রণ হবে। হালনাগাদে অনেক নাগরিক ভোটার হওয়ায় কমিশন আপাতত এ ব্যবস্থা তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখছে। এ ক্ষেত্রে কমিশনের ব্যাখ্যা হচ্ছে, একত্রে জেলাপর্যায়ে বাড়তি চাপ এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close