নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ মার্চ, ২০১৯

কূটনীতিকদের ভুলে স্বীকৃতি আসেনি

মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের ‘ভুলে’ একাত্তরের পঁচিশে মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি আফসোস করে বলেছেন, ২০১৭ সালে জাতিসংঘ যখন আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন দেশের কূটনীতিকরা পঁচিশে মার্চের গণহত্যার প্রেক্ষাপট ‘সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেনি। জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল রোববার ‘একাত্তরের ২৫ মার্চের গণহত্যা ও আমাদের ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে মোজাম্মেল হক এ কথা বলেন।

জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী প্রতি বছর ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশ একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মতো ৯ ডিসেম্বরে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘটনা নেই। আমাদের মুখ্য সুযোগ ছিল ২০১৭ সালে। তখন জাতিসংঘের ভুল সংশোধনের জন্য কূটনীতিকরা সেভাবে প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে পারেনি। তবে সরকার এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২৫ মার্চের গণহত্যা বিষয়ে সারা বিশ্বে জনমত গঠনে কাজ করছে বলে জানান মন্ত্রী।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে যারা বিতর্ক তোলেন, তাদের সতর্ক করে দিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, প্রতিষ্ঠিত সত্যকে যারা ‘বিতর্কিত’ করতে চায় রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের বিচার হওয়া উচিত। তারা ৩০ বছর ক্ষমতায় থেকে ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধকে পেছনে ঠেলে দিয়েছেন। তারা এখন শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শহীদের সংখ্যাকে বিতর্কিত করতে চায়। তারা কি এখন এক দুই করে শহীদের সংখ্যা গোনেন?

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের জন্য জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে আওয়ামী লীগ সরকার ‘গরিমসি’ করছে বলে কোনো কোনো মহলের যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়েও কথা বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রশ্ন ওঠতে পারে, আওয়ামী লীগ কী করেছে? তারা ক্ষমতায় ছিল ৩০ বছর। তাদের শেকড় অনেক ভেতরে। তবে আমরা জনমত গঠন করতে পারলে কাজটি আমাদের জন্য সহজ হবে।

একাত্তরে মুজিবনগর সরকারের বিরোধিতায় খোন্দকার মোশতাক, জিয়াউর রহমানের ভূমিকা প্রকাশে একটি ‘ট্রুথ কমিশন’ গঠন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, বিসিএসে মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর ইতিহাস নিয়ে ১০০ নম্বরের প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, স্কুল পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠ বাধ্যতামূলক করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূস বন্দোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন শহীদ কন্যা নুজহাত চৌধুরী।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আয়োজনে এ সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বীরপ্রতীক ওয়াকার হাসান, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অসীম সরকার, সাবেক তথ্য ও সংস্কৃতি সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, কবি আসাদ মান্নান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আহসান উল্লাহ বক্তব্য দেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close