শাহজাহান সাজু

  ১১ মার্চ, ২০১৯

ভ্যাট আইন সংশোধন

একক হার না রাখার সুপারিশ কমিটির

নতুন ভ্যাট আইন সংশোধন কমিটির সুপারিশে মৌলিক পরিবর্তনের তেমন কোনো প্রস্তাব আসেনি। তবে ভ্যাট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরস্কার ও আর্থিক প্রণোদনা নিশ্চিত করতে সুপারিশ করেছে কমিটি। এছাড়া আইনে টার্নওভার ট্যাক্স ৮০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে একক হার না রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছে কমিটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, নতুন ভ্যাট আইনকে করদাতাবান্ধব করে গড়ে তুলতে গত বছরের ১১ নভেম্বর ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করে এনবিআর। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার আবদুল মান্নান শিকদার। এ কমিটিতে চারজন কমিশনার এবং দুই অতিরিক্ত কমিশনারকে রাখা হয়। কমিটির দেওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে গত সপ্তাহে এনবিআর চেয়ারম্যান এফবিসিসিআই নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সূত্র জানায়, আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। এজন্য কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেখানে আইনের কোনো কোনো বিষয়ে ব্যবসায়ীদের আপত্তি আছে তা জানাতে বলা হয়েছে। কমিটি আইনে নতুন ধারা ১৩৩ খ সংযোজনের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের পুরস্কার দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এ ধারায় কর ফাঁকির তথ্য দেওয়ার জন্য সোর্সকে এবং তা উদ্ঘাটনের জন্য কর্মকর্তাদের শর্তসাপেক্ষে পুরস্কার দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। প্রস্তাবের যৌক্তিকতায় বলা হয়েছে, কর আদায়ে বিশেষ কার্যক্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কার প্রদান করা হলে কর্মকর্তাদের কর আদায় প্রক্রিয়ায় অধিক হারে ব্যাপৃত করা যাবে। তাই নতুন এ ধারাটি সংযোজন করা প্রয়োজন। এরপরই ১৩৩ গ ধারা সংযোজনের মাধ্যমে ভ্যাট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরস্কারের পাশাপাশি আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায় বেশি হলে তার একটি অংশ এনবিআর এবং ভ্যাট কমিশনারেটে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রণোদনা হিসেবে বেতন স্কেল অনুপাতে প্রদান করতে হবে।’ এর যৌক্তিকতায় বলা হয়েছে, ‘এ নতুন ধারার মাধ্যমে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা আদায়ে কর্মকর্তাদের অধিকতর উৎসাহিত করা যাবে। ফলে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।’ ১৩৩ ঘ ধারা সংযোজনের মাধ্যমে কর ফেরত এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরস্কার ও আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার জন্য তহবিল গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।

আইনে নতুন ধারা সংযোজনের মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা রাখার সুপারিশ করে দায়মুক্তি দিতে নতুন ধারা সংযোজনের সুপারিশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘এ আইন বা কোনো বিধির অধীনে সরল বিশ্বাসে কৃত কোনো কার্যের ফলে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে তার জন্য সরকার বা তার কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোনো আইনগত কার্যধারা দায়ের বা রুজু করা যাইবে না।’

কমিটির সুপারিশ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আইনে নতুন ৬টি ধারা সংযোজন, ৩টি ধারা ও ১টি উপধারা বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে। বাকি ধারাগুলোতে আংশিক বা শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সুপারিশে ব্যবসায়ীদের দাবির কিছু প্রতিফলন ঘটেছে। যেমন টার্নওভার ট্যাক্সের সীমা ৮০ লাখ টাকা নির্ধারণ, একক হারের পরিবর্তে পণ্য ও সেবার জন্য তফসিলভিত্তিক ভ্যাট হার নির্ধারণ, সহযোগীর সংজ্ঞা থেকে ‘ব্যক্তির আত্মীয় ও তার অধীনে চাকরিরতদের’ বাদ দেওয়া ও কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের সুপারিশ করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close