শাহ্জাহান সাজু

  ১০ মার্চ, ২০১৯

খেলাপি ঋণ ৯৩ হাজার কোটি টাকা

২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে মোট খেলাপি অংক দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলো বড় অংকের ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নিয়মিত করায় বছরের শেষ তিন মাসে অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ সামান্য কমে ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা হয়েছে। অন্যদিকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। তবে বিদায়ী বছরের শেষ তিন মাসে দেশে মোট খেলাপি ঋণ কমেছে প্রায় ৫ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, সম্প্রতি দেশে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ২৮ নভেম্বর। প্রার্থিতা বাছাইয়ের শেষ দিন পর্যন্ত ১ ডিসেম্বর চলে প্রার্থিদের ঋণ পুনঃতফসিলের হিড়িক। প্রায় ২৫০ আবেদন আসে ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি উচ্চ আদালত প্রার্থীদের পুনঃতফসিল করে দেন। এতে শেষ তিন মাসে (সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর) খেলাপি ঋণ কমেছে প্রায় ৫ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা।

জানা যায়, গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। তবে ডিসেম্বের তা কমে হয়েছে ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। তবে এটি খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র নয়। কারণ এর বাইরেও প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা হিসাব থেকে বাদ দিতে অবলোপন করেছে ব্যাংকগুলো। এগুলোও খেলাপি ঋণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। গত এক বছরে খেলাপি বেড়েছে প্রায় ১৯ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০১৭ সালে খেলাপি ঋণ বাড়ে ১২ হাজার ২৩১ কোটি টাকা। এছাড়া ২০১৬ সালে ২ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে খেলাপি ঋণ বাড়ে যথাক্রমে ৯ হাজার ৫৮০ কোটি ও ৯ হাজার ২৫০ কোটি টাকা হয়। এতে দেখা গেছে, গত ৫ বছরের মধ্যে ২০১৮ সালে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।

সূত্র জানায়, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয়ই মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেক রয়েছে। এই খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪৮ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ৩০ শতাংশেরও বেশি। সরকারি মালিকানাধীন বিশেষায়িত খাতের দুই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ৬১২ কোটি টাকা। এই খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৮ হাজার ২২৫ কোটি টাকা বা বিতরণকৃত ঋণের ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলো বিতরণ ঋণের ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ বা ২ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো খেলাপি ঋণ। কয়েক বছরের তুলনায় গত বছর এটি বেড়ে যায়। এতে ব্যাংকিং খাত আরো চাপে পড়বে। তাই যেকোনো মূল্যে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ উদ্ধার করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close