নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ মার্চ, ২০১৯

ডাকসু নির্বাচনে প্রচার তুঙ্গে

পাল্টাপাল্টি অভিযোগে নেতারা

সাধারণ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে আগ্রহ কম

ভোটের পরিবেশ মানেই চারদিকে মিছিল-সেøাগান আর জমজমাট আড্ডা; ভাবনায় নির্বাচনী আমেজ। কিন্তু দীর্ঘ ২৮ বছর পর হতে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে তেমনটি দেখছেন না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে, দীর্ঘদিন ডাকসু নির্বাচন না হওয়ার কারণে তেমন কোনো ক্রিয়াশীল ছাত্র আন্দোলন ক্যাম্পাসে গড়ে উঠেনি। আর ডাকসুর ইতিহাস না জানার কারণেও অনেক শিক্ষার্থী এ নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা আগ্রহও দেখাচ্ছেন না। ফলে উচ্ছ্ব¡াসভরা ভাবে নেই তারা। তবে গতকাল মঙ্গলবারও দিনভর প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেছেন। বলা যায়, আনুষ্ঠানিক প্রচার জমে উঠেছে। সারা দিন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, বাম ছাত্র সংগঠনসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার চালান।

জয়ী হলে বিশ্ববিদ্যালয়কে কীভাবে সাজাবেন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য কী করবেন সেই প্রতিশ্রুতির ডালি সাজিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট চাইছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করছেন নারী প্রার্থীরাও। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেইদিকে আগ্রহ নেই।

শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসের বিষয়ে কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী বলেন, নির্বাচনটা শেষ হলেই কোনো প্রার্থীরই দেখা মিলবে না। জানাতে পারব না আমাদের সমস্যার কথাও। তাছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে না পারলে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাবমূর্তিই ক্ষুণœ হবে না, সারা বিশ্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সুনাম রয়েছে, তাতেও আঘাত আসতে পারে। আবার অনেকে বলেন, প্রায় তিন দশক পর হতে যাওয়া এ নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ওপর নির্ভর করছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও এখনো অনেক বিষয় অমীমাংসিত থেকে গেছে। সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো এবং সরকার সমর্থিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে একে অন্যের বিরুদ্ধে। সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর মূল অভিযোগ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোয় ও ক্যাম্পাসে এখন পর্যন্ত প্রত্যাশিত সহাবস্থান নিশ্চিত হয়নি। তাদের আরো অভিযোগ, তারা ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বৈরী আচরণের শিকার হচ্ছেন এবং ক্যাম্পাসে প্রচার-প্রচারণায় কিছুটা সুযোগ পাওয়া গেলেও হলগুলোয় নির্বিঘেœ অবস্থান করতে পারছেন না। এসব বিষয়গুলোও ভালোভাবে দেখছে না সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে প্রচারে নামেন ছাত্রলীগের জিএস প্রার্থী গোলাম রাব্বানী, এজিএস প্রার্থী সাদ্দাম হোসেন, ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসে কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে প্রচারণা চালিয়েছেন। এছাড়া নিজ নিজ হল সংসদের প্রার্থীরা প্রচারে অংশ নেন। প্রচারে ছিলেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের প্রার্থীরাও।

এ সময় সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ভিপি প্রার্থী নূরুল হক নিয়ে বলেন, আমরা আশা করছি, পরিবেশ সুন্দরই থাকবে। বিশ্বদ্যালয় প্রশাসন একটি ইতিবাচক নির্বাচন জাতিকে উপহার দেবেন।

এদিকে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান প্রচারে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন যায়গায়। কিন্তু হলগুলো এখনো ছাত্রলীগের দখলে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

কিন্তু ছাত্রদলের এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস প্রার্থী সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, অতীতের কুকর্মের ধারা থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এখনও বের হতে পারেনি। বিশেষত ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের থেকে বিচ্ছিন্ন একটি সংগঠন এবং দীর্ঘদিন সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা না থাকায় তারা কোনো হলেই পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিতে পারেনি। ছাত্রদল এখনো অনের ওপরে দোষারোপের রাজনীতি থেকে এখনো বেরিয়ে আসতে পারেনি।

প্রার্থিতার বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ছাত্রলীগের প্রস্তাব অনুযায়ী- এমন অভিযোগও করেছেন তারা। এছাড়া ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর এসব অভিযোগ খন্ডন করে ছাত্রলীগ বলছে, বিশেষত ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের থেকে বিচ্ছিন্ন একটি সংগঠন এবং দীর্ঘদিন সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা না থাকায় তারা এ ধরনের কথা বলে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close