নিজস্ব প্রতিবেদক
‘সব হাসপাতাল মর্গে ঘুরেও বাবার লাশটা পাইনি’
চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরছে। হাতে শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন একটি ছবি। এটা কার ছবি, জানতে চাইলে বললেন, ‘আমার আব্বু এটা’। সেদিন আব্বু ওষুধ কিনতে বাড়ি থেকে বের হন। আব্বুকে বলেছিলাম তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে, আব্বুও বলেছিলেন, আচ্ছা। কিন্তু আব্বু আর বাড়ি ফেরেননি। তাই তাকে খুঁজতে এসেছি। গতকাল শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের সামনে এভাবেই বলছিলেন ফারিহা তাসনীম রিচি। অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন রিচির বোন ফাহিমা তাসনীম সূচি, মা ফাতেমা আক্তার, ফুফাতো ভাই নজরুল ইসলামসহ অন্যরাও।
রিচি বলে, ‘আমাদের বাড়ির কয়েকবাড়ি পরই আগুন লাগে। আম্মু আমাকে বলেন তোমার আব্বুকে ফোন দাও, সঙ্গে সঙ্গে আমি ফোন দিই আব্বুকে, কিন্তু তখন থেকেই আব্বুর ফোন বন্ধ পাই। তারপর থেকে সব হাসপাতালে, সব মর্গে দেখেছি, কিন্তু কোথাও আমার আব্বুর লাশটা পাইনি। তাই বাবার লাশ শনাক্ত করতে এসেছি মর্গে। মা আর দুই বোন মিলে ডিএনএ টেস্টের জন্য স্যাম্পল দিচ্ছি এখন।’
ফুফাতো ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকা-ের ঘটনার পর থেকে রিচির বাবা মো. ফয়সাল সারোয়ার নিখোঁজ রয়েছেন। ঢাকার সব হাসপাতাল, মর্গে কোথাও পাননি তাকে। তাই আজ মা আর দুই মেয়ে এসেছেন ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা দিতে।
ফারিহার বাবা পুরান ঢাকার চাঁদনী ঘাটে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবসা করতেন। ফারিহা বলেন, সেদিন রাতে আমি আব্বুকে বলেছিলাম, তুমি তাড়াতাড়ি বাসায় আইসো, আব্বুও আচ্ছা বলেছিল। কিন্তু আব্বু আর আসেননি।
বাবা কেন বেরিয়েছিলে জানতে চাইলে ফারিহা বলেন, ওষুধ কেনার জন্য বেরিয়েছিলেন।
ফারিহার ফুফাতো ভাই নজরুল ইসলাম আরো বলেন, তার ছোট ভাইয়ের বিয়ের কথা চলছে, সে বিষয়ে পারিবারিক আলোচনার জন্যই সেদিন তার তাদের বাসাতেও যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আর কথা হয়নি তার সঙ্গে।
"