নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

প্রতিটি বাঙালিকে আবেগে আপ্লুত করে যে গান

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলিতে পারি’ খ্যাতিমান গীতিকার আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর লেখা ও দেশ বরেণ্য সুরকার আলতাফ মাহমুদের সুরে এই কালজয়ী গানটি একুশের চেতনায় আমাদের এখনো উজ্জীবিত করে। অধিকারের লড়াইয়ে আমাদের সাহস ও অনুপ্রেরণা যোগায়। এই একটি গান এত জনপ্রিয় যে, এই গানে ভাষার প্রতি প্রতিটি বাঙালি শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে ওঠে। তাই তো অমর একুশের প্রভাত ফেরিতে আমরা গেয়ে উঠি আমাদের গৌরবের অহংকারের কালজয়ী এই গান। প্রতি বছর বিনম্র শ্রদ্ধায় পালিত হয় একুশে ফেব্রুয়ারি। কাল অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। পলাশ শিমুলের রঙে অমর একুশের গানে গানে আর ফুলে ফুলে ভরে উঠবে স্মৃতির মিনার।

গানে গানে, সুরে সুরে চেতনায় একুশ ছড়িয়ে পড়–ক বাংলার প্রতিটি পথে প্রান্তরে। বাঙালির মাতৃভাষা, রাষ্ট্রভাষার আন্দোলনে বাঙালির রক্তে রাঙা ‘একুশ’ এখন ‘বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃত। তবু এখনো বহু কাজ বাকি। সর্বস্তরে আজও বাংলা চালু হয়নি। অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চশিক্ষা, গবেষণাসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এখনো ইংরেজির প্রাধান্য বেশি।

১৯৫২ থেকে ২০১৯। ছয় দশকের এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় একুশে ফেব্রুয়ারিকে পাই আমাদের অন্তহীন প্রেরণার উৎস হিসেবে। বর্ণমালার শরীর বেয়ে যে দ্রোহের আগুন জ্বেলেছিল, সেই পথেই বাঙালি পায় একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র।

মাতৃভাষার দাবিতে বাঙালি তরুণদের সেদিনের আত্মবলিদান শুধু ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, ক্রমেই একটি গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার স্বপ্ন ও অঙ্গীকার দানা বেঁধেছিল। সে স্বপ্নই স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধসহ ইতিহাসের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আমাদের পথ দেখিয়েছে।

তাই ফেব্রুয়ারি স্বাধীনতা, মুক্তি, সাম্য, গণতন্ত্র-আধুনিক বাঙালির সব শুভ চেতনার মাস। মাতৃভাষা বাংলার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের মহিমা ছড়িয়ে পড়েছে ভৌগলিক সীমারেখা অতিক্রম করে পৃথিবীর সব জাতি-গোষ্ঠীর মাতৃভাষার স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে। সত্য, ন্যায়, শান্তি ও গণতন্ত্রের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের দৃঢ় অঙ্গীকারের বার্তা ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয় এই দিনে। সবার পথ এসে মিশে যায় শহীদ মিনারে। কণ্ঠে থাকে সেই চিরচেনা আবেগময় সুর। মধ্যরাত থেকে চলে শ্রদ্ধাঞ্জলির পর। ভোরের হাওয়ায় সে পর্ব আরো সতেজ হয়ে ওঠে। ভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে বাংলা মায়ের বীর সন্তানদের বুকের রক্ত ঢেলে রাজপথ রাঙিয়ে দেওয়ার দিনটি স্মরণ করে পরম শ্রদ্ধা ও মমতায়। দিনটি যখন বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। তখন বাঙালি হিসেবে আরেকবার আমাদের বুক ফুলে ওঠে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close